প্রথম প্রহরে-

0 ৯৩৭

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম : অমর একুশের প্রথম প্রহরে জাতির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তির শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নামে বাঁধভাঙ্গা স্রোত। হাজারও মানুষ বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় স্মরণ করেন ভাষাশহীদদের। রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে রাষ্ট্রপতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। তারা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি সম্মান জানান। শেখ হাসিনা পরে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আবারও শহীদ মিনারে ফুল দেন।

প্রধানমন্ত্রীর পর স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ, রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ১৪ দল, রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল, তিন বাহিনীর প্রধানরা, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি প্রধান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এর পরই শহীদ মিনারে মানুষের বাঁধভাঙ্গা স্রোত নামে। আনসার ও ভিডিপি, বাংলা একাডেমি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সৎসঙ্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে লাইন ধরে ফুল দিয়ে অমর শহীদদের শ্রদ্ধা জানান। তবে রাত সোয়া একটার দিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনার এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ইট-পাটকেল ছুড়তে ছুড়তে তারা শহীদ মিনারের দিকে এগোয়। রাত ১ টা ৪০মিনিটে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ সময় বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হুড়োহুড়ির কারণে শহীদ মিনারে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের হিমশিম খেতে হয়।

এছাড়া শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, গণজাগরণ মঞ্চ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাসদ, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রমৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন। সর্বস্তরের নাগরিক ফুল দিয়ে বায়ান্নর ভাষাশহীদদের স্মরণ করেন। মাইকে বাজতে থাকে অমর একুশের গানের করুণ সুর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি’। ধারাভাষ্যকাররা অবিরাম কবিতার পঙতিমালা আবৃত্তি করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও একুশের প্রথম প্রহরে রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে জেগে উঠেছিল দেশের মানুষ। আজিমপুর মোড় থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মানুষের দীর্ঘ সারি। যেন শহরের সব পথ এসে মিলেছে এখানে। রাত বারোটায় মানুষের যে ঢল নামে তা অবিরত চলে প্রভাতফেরি পর্যন্ত। ভিনিউজ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.