প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দেবে বিএনপি
বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম : আগামীতে ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ রূপরেখা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংলাপের প্রস্তাব দেবে বিএনপি।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করে- নির্বাচনকালীন যদি একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, তাহলে কারো পক্ষেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’
‘আর সে কারণেই নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সহায়ক সরকার প্রয়োজন। আমরা এই সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেব’ যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
এ প্রস্তাব রাষ্ট্রপতিকে দেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাজ তো শেষ হয়ে গেছে। উনি তো করে ফেলেছেন, যেটা অপকর্ম করার করে ফেলেছেন। আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীকে সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই প্রস্তাব দিয়ে আমরা সরকারকে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য বলবো। এবার আমরা প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব দেব যে, এভাবে আসতে হবে। তা না হলে সকল দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।’
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নতুন সিইসি সম্পর্কে আমরা জনগণের সামনে আমাদের দলীয় অবস্থান পরিষ্কার করেছি। আমরা বলেছি- তিনি সিইসি হওয়ার মতো যোগ্য নন।’
এ সময় পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে কানাডার আদালতের রায়ের পর সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে কেন? কারণ বিশ্বব্যাংক ওই অভিযোগ নিয়ে এসেছে, বিশ্বব্যাংক চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কি চুপ করে বসে থাকা?’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক কিন্তু তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি। দুর্নীতি হয়নি, এটা কিন্তু তারা বলেনি। দুর্নীতি হয়েছে- এই অবস্থান থেকে বিশ্বব্যাংক সরে আসেনি।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘দুর্নীতি শুধু পদ্মা সেতুতে হচ্ছে না, সারা বাংলাদেশের দুর্নীতির লহরি বয়ে গেছে। আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখছি- দুর্নীতির মান শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে।’
দেশে লাগামহীন দুর্নীতি চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক লুট করে নেয়া হচ্ছে, ওভারব্রিজ খেয়ে ফেলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক খেয়ে ফেলা হচ্ছে, শেয়ারবাজার পুরোপুরি নিয়ে নেয়া হচ্ছে। কোনটা বাকি আছে?’
এর আগে একুশে ফেব্রুয়ারি ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে যৌথসভার আয়োজন করে বিএনপি। এতে দুদিনের কর্মসূচি নেয়া হয়।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- শহীদ দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে পুস্পমাল্য অর্পণ, সকালে আজিমপুর গোরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ। আর আগের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা।
যৌথ সভায় দলের দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমা ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন ও হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম মঞ্জু, শাখাওয়াত হোসেন জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন ও মাহবুবুর রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নুরী আরা সাফা, আবু সাঈদ খান খোকন, আজিজুল বারী হেলাল, কলিমউদ্দিন মিলন, অনিন্দ ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুণ্ডু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, শাহিন শওকত, আকন কুদ্দুসুর রহমান, মোস্তাক মিয়া, আবদুল আউয়াল খান, ওয়ারেস আলী মামুন, মাশুকুর রহমান, শামসুজ্জামান, জাহাঙ্গীর হোসেন, জালাল মজুদার, হারুনুর রশীদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন কাজী আবুল বাশার, মোরতাজুল করীম বাদরু, ইউনুস মৃধা, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, হাফেজ আবদুল মালেক, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, মিলন মেহেদি, আবুল কালাম আজাদ, রাজীব আহসান প্রমুখ।ভিনিউজ।