বগুড়ার শেরপুরে মসজিদের নির্মাণকাজে চাঁদা দাবীর অভিযোগ ॥ চাঁদাবাজকে গণপিটুনী

0 ১,১৩৪

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরের ছোনকা উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদ এর কাজ বন্ধ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এক ডাকাতি মামলা ও মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ওই এলাকায় মিটিং চলাকালীন সময়ে মসজিদের কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনায় গণপিটুনি দেয় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।
জানা যায়, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ছোনকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পত্তির আয়ে ছোনকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিগত দেড় বছর আগে জামে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করে তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। পরে ২০১৬-১৭ সালে ওই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুজ্জামান মৃদুল ও প্রতিষ্ঠান প্রধান এস এম রাশিদুল হাসানের নেতৃতে মসজিদটির পুর্ণাঙ্গ কাজ শুরু করে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির এধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এলাকার সচেতন ও দানশীল ব্যক্তিরাও এগিয়ে আসে মসজিদ উন্নয়নে। এদিকে ওই মসজিদের উন্নয়ন ও বিদ্যালয়ের অনুকুলে অনেক অর্থ জমা হওয়ায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এলাকার কতিপয় চাঁদাবাজরা। চাঁদার দাবি করতে থাকে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুজ্জামান মৃদুল ও প্রধান শিক্ষকের কাছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার বিকালে মিটিং চলাকালীন সময়ে ওই এলাকার চাঁদাবাজ খ্যাত আব্দুর রাজ্জাক প্রকাশ্যে চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাজ্জাককে গণপিটুনী দেয় এলাকাবাসী বলে ছোনকা মসজিদের উন্নয়ন কমিটির নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ীরা জানিয়েছেন। উক্ত ঘটনায় রাজ্জাক আহত হয়ে শেরপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়। এদিকে চাঁদার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে রাজ্জাক ও সহযোগীরা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি আরিফুজ্জামান মৃদুলকে ফাঁসানোর চেষ্টায় গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বলে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য এবং স্থানীয় সচেতনমহলেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিশ্বস্ত সুত্রে প্রকাশ, আব্দুর রাজ্জাক বিরুদ্ধে জয়পুরহাট জেলার কালাই থাকায় ডাকাতি মামলার আসামী হওয়ায় সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানায় আটক হয়ে কারাভোগও করেছে। তাছাড়া রাজ্জাক বর্তমানে এলাকায় মাদক বিক্রির পাশাপাশি তার সহযোগীদের নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজী করছে, এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গত মঙ্গলবারে ছোনকা মসজিদ নির্মান ও উন্নয়নকল্পে মিটিংয়ের মধ্যে প্রকাশ্যে চাঁদা দাবী করা।
নির্ভরযোগ্য সুত্রে প্রকাশ, ছোনকা মসজিদ কমিটির ওই মিটিংয়ে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী এবং নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক হয়ে একাধিকরা জানান, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের নিজ প্যান্টের পকেটে থাকা চাকু দিয়ে নিজের কোমরই কেটে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়। তাছাড়া আব্দুর রাজ্জাক, রফিক, হায়দার ও তাদের দলবল মসজিদের নির্মানের কাজে শুরু থেকেই চাঁদা চেয়ে আসছিল। ওদের চাঁদাবাজির দাবীর কারনে এলাকার মসজিদের উন্নয়ন প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এই ওই ঘটনায় আহত আব্দুর রাজ্জাক চিকিৎসা শেষে এলাকায় ফিরে গিয়ে বগুড়ার ছাত্রলীগ নেতা ও ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি আরিফুজ্জামান মৃদুলকে জড়িয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উঁদোর পিন্ডি বুঁদোর ঘাড়ে দেওয়ার জন্য ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এস এম রশিদুল হাসান বলেন, কাজ শুরুর প্রথম দিকে আব্দুর রাজ্জাক ও তার দলবল মিলে আমায় জিম্মি করে ২৫ হাজার টাকা নেয়। আমি তৎকালীন শেরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলাম কিন্তু কোন লাভ হয়নি । তিনি আরো বলেন, এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ ।
এ ব্যাপারে আব্দুর রাজ্জাক ওই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, এটাও আমার বিরুদ্ধে অন্যরকম ষড়যন্ত্র।
এ দিকে ছোনকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জামে মসজিদ তৈরী ও উন্নয়নে প্রাক্তন সভাপতি আরিফুজ্জামান মৃদুলের ভুমিকা প্রশংসীয় হওয়ায় ঈর্শ্বান্বিত হয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে এলাকার সচেতনমহল দাবী করছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.