বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে থাইল্যান্ড ভিত্তিক মালিকানাধীন সিপি (চারন পোকফান্ড)পোল্ট্রি হ্যাচারীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম আর দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানাযায়, থাইল্যান্ড ভিত্তিক সিপি কোম্পানীর মালিক মিঃ শান্তি পোংচাই সোপান ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে শেরপুর উপজেলার আমিনপুর নিজাম বগুড়া মৌজায় ১৫টি খতিয়ানের মোট ১৬টি দাগে মাত্র ৪একর জমির ওপরে ২০০৭সালে সিপি নামের এই পোল্ট্রি হ্যাচারী শিল্পটি গড়ে উঠে।
উত্তরাঞ্চলের রংপুর জেলায় সিপির আরও ৮টি ফার্ম সহ গোটা দেশে মোট ৫০টি সিপি ব্রিড আরবান হ্যাচারী ও মুগরীর ফার্ম গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ সরকারের শিল্প আইনের অধীনে ব্যবসা-বানিজ্য পরিচালনার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি সেবার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় সিপি লিমিটেড কোম্পানী। উন্নত প্রযুক্তিতে এই পোল্ট্রি হ্যাচারীতে অটোমেটিক মেসিনের মাধ্যমে ডিম থেকে মাত্র ২১দিন পর ফুঁটানো হয় মুরগীর বাচ্চা। এরপর বাচ্চা গুলো প্রতিটি কার্টুনে ৪০-৫০টি করে ভরে কোম্পানীর নির্ধারিত ডিলারদের মাধ্যমে বাজারজাত করার বিধান আছে। আর সেখানেই স্থায়ী ভাবে বাসা বেঁধেছে হাজারো অনিয়ম আর দূর্নীতির রাহু গ্রাস।
ফলে বছরের পর বছর ধরে শেরপুরের নিজাম বগুড়া হ্যাচারীতে জমে থাকা সকল প্রকার দূর্নীতি আর অনিয়মের সুষ্ঠ বিচার দাবী করেছেন ডিলার ও ব্যবসায়ীরা। সিপি কোম্পানীর বগুড়ার শেরপুরের ম্যানেজার মেহেদি হাসান এসকল অনিয়ম আর দূর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি মুখ খুলতে নারাজ। অনেকেই মন্তব্য করেন অনিয়মের হোতা তার কাছেই আছে।
গত বুধবার দুুপরে শেরপুরের আমিনপুর নিজাম বগুড়া অফিসে গিয়ে জানা যায়, সিপি লিমিটেড কোম্পানীর ম্যানেজার অফিসে নাই। তার অনুপস্থিতিতে কথা হয় ক্যাশিয়ার মারুফ হোসেনের সাথে। তিনি জানান, সিপি লিমিটেড কোম্পানীর অধীনে গোটা দেশে প্রায় ৫০টির অধিক পোল্ট্রি হ্যাচারী আছে। ওই সকল হ্যাচারীতে যে, পরিমান মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন করা হয়, ডিলার ও ব্যবসায়ীদের চাহিদা তার চেয়ে প্রায় ৩-৪গুন বেশি। ঠিক সে-কারণেই অভিযোগ গুলো আসতে পারে। শেরপুরের হ্যাচারীতে প্রতিমাসে ৩টি জাতের সাড়ে তিন থেকে চারলাখ বাচ্চা উৎপাদন হয়ে থাকে।
ডিলাররা জানায়, অত্যন্ত গোপনে রাতের আধাঁরে কোম্পানীর নির্ধারিত ডিলারের পরিবর্তে কালো বাজারে দালালদের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে মুরগীর বাচ্চা। আর হ্যাচারীর ভেতরে বাচ্চার উৎপাদন কর্মকান্ডকে দায়ী করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। যারফলে সিপি কোম্পানীতে লাখ-থেকে কোটি টাকা জমা দিয়েও মাসের পর সিরিয়াল নামের টিকিট মিলছে না ডিলারদের কপালে।
আর সঠিক সময়ে মুরগীর বাচ্চা না পাওয়ায় এলাকার ছোট-বড় শত শত পোল্ট্রি শিল্পের মালিকরা দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অনেকে পোল্ট্রি শিল্পের মালিক ব্যাংক ঋনের ভারে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আত্মগোপন করেছেন। শেরপুরের সিপি খামারের ম্যানেজার ও সেলস ম্যানেজারের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, আমি কোন প্রকার অনিয়মের সাথে জড়িত নাই।
বর্তমানে আমি যশোরের চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থান করছি। অফিসের কাজে আমাকে এলাকার বাহিরে থাকতে হয়। অফিসের দর অনুয়ায়ী মাত্র ১দিন বয়সের প্রতিটি ককরেল মুরগীর বাচ্চার দাম ১৫-২০টাকা, ব্রয়লার বাচ্চার দাম ৩৫-৪০টাকা এবং লেয়ার বাচ্চার দাম প্রতিটি ১১০-থেকে ১৪০টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ডিলারদের চাহিদা অনুযায়ী মুরগীর বাচ্চার দাম নির্ধারণ করা হয়। এখানে সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন নাই। সিপি হ্যাচারীতে উৎপাদিত মুরগীর বাচ্চা অত্যন্ত গোপনে কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগে তিনি বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। তবে ডিলারগন উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের নিয়ন্ত্রন নাই। সিপির ডিলার মজনু মিয়া জানায়, টাকা দেয়ার পরেও গত ৩-৪মাস যাবত কোন প্রকার মালামাল তাকে দেয়া হয় নি। কারণ সিপির কর্মকর্তা গণ মুরগীর বাচ্চা গুলো সপ্তাহের শনিবার,রবিবার,মঙ্গলবার আর বুধবার ভোররাতে উচ্চ মূল্যে কালো বাজারে বিক্রি করে থাকে তাই।