আল আমিন মন্ডল, বগুড়া : বগুড়া জেলায় এবছরে সোনালী আশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ১২উপজেলা গুলোতে পাটচাষীরা এখনো সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। পুকুর, নদ-নদী, খাল-বিল, ডোবা-নালা, জলাশয়ে কাদা মাটি ও দুর্ষিত দুগন্ধো পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় কমছে পাটের গুনগতমান ও পরিবেশ হচ্ছে দুর্ষিত।
সুত্র জানায়, এবছরে বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় চলতি মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১হাজার হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ১৬হাজার ৬শত ৭০বেল। এবছরে ১১ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ১শত ৭০হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে নেপালতলীতে। আর সবচেয়ে কম পাট চাষ করা হয়েছে ১০হেক্টর জমিতে দক্ষিনপাড়া’য়। তবে পাট চাষে অনূকুল আবহাওয়া ও কৃষকরা সময়মত পাট বীজ পাওয়ায় এবছরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাগন পাটের গুনগতমান বৃদ্ধিতে পাট জাগ বিষয়ে কৃষকদের তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করলেও পাটচাষীরা তা মানছেন না। ফলে তারা সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। ফলে পাটের রং কালো ও গুনগত মান হ্রাস পাচ্ছে। পাটের পচা পানির দুগন্ধে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এবিষয়ে গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, রিবনার পদ্ধতিতে পাট জাগ বা পাট পচানো বিষয়ে কৃষকদের তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, চাষীরা আমাদের পরামর্শ না মানায় পাটের রং বিবর্ণ হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা কাঙ্খিত মূল্যে পাচ্ছে না। বরং তারা নানা অজুহাতে সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। গাবতলী উপজেলা উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ চৌধুরী জানান, সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ না দেওয়ার জন্য কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গাবতলী উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও মোঃ জাহেদুর রহমান জাহিদ জানান, রিবনার পদ্ধতিতে পাটের আশভাল থাকে ফলে পাটের গুনগতমান বৃদ্ধি পায়। যেখানে পানির যথাযথ ব্যবস্থা নেই সেখানে কৃষক রিবনার পদ্ধতি অনুসরন করতে পারেন। রামেশ্বরপুর আকন্দপাড়া পাটচাষী রবিউল ইসলাম জানান, কৃষি কর্মকর্তাগন রিবনার পদ্ধতি ও পলিথিন, বালি, বস্তা ভর্তি ইট দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার পরামর্শ দিলেও জায়গা, পানি, সময় স্বল্পতা ও ব্যয়বহুল হওয়ায় পাট চাষী কেউ পরামর্শ মানছে না। আহম্মেদপুর গ্রামের পাটচাষী আজাহার আলী, দড়িপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন, উজগ্রাম এলাকার কৃষক বুলু মিয়া জানান, কৃষি কর্মকর্তাদের কথা মতে পাট জাগ দিতে বহু অর্থের প্রয়োজন। তাই সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিয়েছি। তবে পাটের গুনগতমান একটু কম হলেও পাটকাটি (জ্বালানি) বিক্রি করে লাভ হবে। কৈঢোপ গ্রামের পাটচাষী মোয়াজ্জেম, সাহাদত, মান্নান, দাসকান্দি গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান ভিন্ন কথা তারা বলেন, আমরা এবিষয়ে প্রথম শুনলাম। কৃষকদের মাঝে রিবনার পদ্ধতিতে পাট জাগ বিষয়ে আরো বেশী সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
Prev Post