বর্তমানে পরিবারটি অনাহারে-অর্ধাহারে দেখার কেউ নেই!

0 ১২২

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ১টি মুদিখানা দোকান দু’দুবার পূর্বের শত্রুতাবসত: আক্রোসমূলকভাবে আগুন লাগিয়ে সম্পূর্ণ ভস্মিভূত করলো পার্শ্ববর্তীরা। আগুন লাগার দু’মাস অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারের অবজ্ঞা আর অবহেলায় দোকান মালিক নাসিরের পরিবারটি এখন অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে বলে প্রত্যক্ষ করা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখে এবং এর প্রায় দুইমাস পরে বহু কষ্টে পূনরায় ছোট্ট করে বানানো দোকানটিতে একই কায়দায় গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ইং আবারো আগুন লাগিয়ে সম্পূর্ণ ভস্মিভূত করে। ঘটনাটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হলেও এমনকি প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ করলেও কোন প্রতিকার হয়নি মুদিখানা দোকান মালিক নাসিরের। অসহায়-গরীব নাসির এ প্রতিবেদককে জানায়, আমার বহু কষ্টে গড়া একটি মুদিখানা দোকান করে বেশ ভালভাবেই চলে যাচ্ছিল আমার পরিবারকে নিয়ে।

কিন্তুু আমার পার্শ্ববর্তী মৃত কয়েশ উদ্দিনের ছেলে টফিক (৪৭) ও মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে মোঃ দেলোওয়ার (৩৬) এরা দু’জনে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এনিয়ে দ’ুবার আমার দোকানটি আগুন দিয়ে সম্পূর্ণ ভস্মিভূত করলো। আমার দোকানে আগুন লাগিয়ে ক্ষয়ক্ষতির আগের পরিমাণ ছিলো-প্রায় ১লাখ ৫০হাজার ও পরের ক্ষতির পরিমান ছিলো প্রায় ৫০হাজার টাকা।

এ ব্যাপারে ভোলাহাট থানার সাথে লিখিত অভিযোগ করলে তাঁরা দু’জনেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল-হাজত হলেও স্থানীয় জামাতের নেতাদের তদবীরে ঐ দু’জন আসামী জামিনে বাড়ীতে এসে নাসিরের সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ দুর্ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে। আমি নিয়মানুযায়ী স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের স্মরণাপন্ন হলেও অদ্যাবধি কোনপ্রকার উপকার-সাহায্য পায়নি। এমনকি থানা-পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও ফায়দা হয়নি। চেয়ারম্যান-মেম্বার ও থানা-পুলিশ আজকাল করে সময় অতিবাহিত করে।

দু’দুমাস অতিবাহিত হলেও কোনপ্রকার সুরাহা-ফলাফল পায়নি বলে কেঁদে ফেললেন, নাসির। স্থানীয় ঐ এলাকার বাসিন্দা আরসাদ আমিন জানায়, নাসিরের দোকানে কে আগুন লাগিয়েছে, আমরা কিছু লোকে জানলেও আমাদের কিছু করা বা বলার নেই। নাসির আরো বলে, সত্য কথা পুলিশের কাছে বলে লিখিত অভিযোগ করেও কোনপ্রকার ফায়দা হয়নি।

আরসাদ আমিন আরো বলেন, আমরা গ্রামবাসী সকলে মিলেমিশে গতবার দোকানটি আগুনে পুড়িয়ে দিলে, গ্রামের সকলেই চাঁদা আর বাড়ী বাড়ী চাল-ধান তুলে নাসিরের দোকানটি পুনরায় চালু করার প্রচেষ্টা চালাই। কিন্তু দোকান মালিক নাসিরের কপালে খারাপি আছে, পূর্বের কায়দা-কৌশলেই ফেরও ঐ টফিক ও দেলোওয়ার দোকানটি পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। অথচ এর আগে আগুনে পুড়া দোকানটির কোনো প্রকার সুরাহা হতে না হতেই দ্বিতীয়বার আগুন লাগিয়ে পোড়ানো হয়।

এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে ভোলাহাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কাউসারুল আলম সরকার ও থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ সেলিম রেজা চৌধুরীর সাথে যোগাযোগে জানান, এ ঘটনায় সুরাহার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানই যথেষ্ট। ইউনিয়ন পরিষদে এ বিষয় সংক্রান্ত কাগজাদি রয়েছে, যা যথাযথভাবে পূরণ করে আমাদের কাছে পাঠালে যথোপযুক্ত নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ্য নাসিরের দু’দুবার দোকান আগুনে পুড়িয়ে ভস্মিভূত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে, সংশ্লিষ্ট দলদলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ মোজাম্মেল হক চুটু বার বার একই কথার জবাব দেন এবং বলেন, আমি নিয়মানুযায়ী যা যা করা দরকার আছে, সে অনুযায়ী কাগজাদি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা করেছি, সময় সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা হবে বলে তিনি বিষয়টি বার বারই এরিয়ে যাবার চেষ্টা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ কাউসারুল আলম সরকার আরো বলেন, এ সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা সংশ্লিাষ্ট কর্মকর্তাদের অফিসে অনুপস্থিত এবং অতিরিক্তি দায়িত্ব পালনে নানা জটিলতার কারণে উপজেলার দাবীর আর্জিগুলি যথোপযুক্ত সময়ে অনুমোদন হয়ে না আসার কারণে ভূক্তভোগীদের নানা হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। জেলার কর্মকর্তাগণ আমাদের পাঠানো কাগজাদি যথাসময়ে ছেড়ে দিলে আমরাও ভূক্তভোগীদের তাদের প্রাপ্ত অনুদান দিয়ে তাদেরকে শান্ত করতে পারতাম। এতে ক্ষতিগ্রস্থ্যরা খুশি আর আমরাও এতে একটু পরিতৃপ্তি পেতাম বলে জানান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.