নিজস্ব প্রতিবেদক: কর অঞ্চল রাজশাহীর উদ্যোগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও রাজশাহী জেলার ২০১৯-২০২০ কর বছরের সেরা ১৪জন করদাতাকে সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কর ভবনের কনফারেন্স হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেরা করদাতাদের হাতে সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, দেশে করতাদাদের সংখ্যা কম। করতাদাতের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় অনেকে কর দিতে উৎসাহিত হবে। সামর্থবান ব্যক্তিদের কর প্রদানের আহ্বান জানচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। দেশের প্রতিটি সূচকে গর্ব করার মতো উন্নয়ন হচ্ছে। এমনি করোনাকালে দেশের উন্নয়ন থেমে নেই। করোনা মোকাবেলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখনো বাংলাদেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছি।
রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহী শিক্ষানগরী হিসেবে সারাদেশে পরিচিত। রাজশাহীতে আরো বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। রাজশাহী মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের কাজ চলছে, আরো নতুন দুইটি সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। সম্প্রতি হলি ক্রস কলেজের রাজশাহী শাখার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। আগামী কৃষি বিশ^বিদ্যালয় ও গালর্স ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
মেয়র বলেন, শুধু শিক্ষা নিয়ে আমরা বেঁচে থাকতে চাই না। রাজশাহীতে শিল্পায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে বিসিক শিল্পনগরী-২ এর কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে এখানে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চামড়া শিল্প পার্কের জমিও দেখা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্যও অনুমোদন পাওয়া গেছে। রাজশাহীতে বিনিয়োগকারীদের আনার চেষ্টা চলছে। পদ্মানদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চলছে। নৌবন্দর প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে ভারত থেকে মালামাল আমদানি-রপ্তানি করা সম্ভব হবে, রাজশাহীর ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। অর্থনীতিতে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
মেয়র আরো বলেন, আমি নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম ৭/৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করা হবে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া গেছে, যার বিভিন্ন কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আরো তিনটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সবার সহযোগিতায় রাজশাহীকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
কর অঞ্চল রাজশাহীর কর কমিশনার মুহাম্মদ মফিজ উল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনি ও কর আইনজীবী সমিতি রাজশাহীর সভাপতি মোঃ ফজলে করিম। স্বাগত বক্তব্য দেন অতিঃ কর কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে সেরা করতাদারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট পেলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকার সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী করদাতা আব্দুল আওয়াল, সৈয়দ জাকির হোসেন ও আজিজুল আল বেন্টু, দীর্ঘ সময় কর প্রদানকারী করদাতা মিজ্ আলেফা খাতুন ও আব্দুস সালাম সরকার, ৪০ বছর বয়সের নীচে তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী করদাতা তৌরিদ আল মাসুদ রনি, সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা নূরজাহান বেগম, রাজশাহী জেলার সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী করদাতা কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন, এস. এম. বজলুর রহমান, ও মোঃ আব্দুস সোবহান, দীর্ঘ সময় কর প্রদানকারী করদাতা মোঃ আশরাফুল হক ও ওছমান আলী, ৪০ বছর বয়সের নীচে তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী করদাতাবেলাল উদ্দীন ও সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা ইসরাত জাহান।
এদিকে করদাতাদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান শেষে কর ভবনে বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও লাইব্রেরীর উদ্বোধন করেন রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধন শেষে বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও লাইব্রেরী ঘুরে দেখেন। এ সময় কর অঞ্চল রাজশাহীর কর কমিশনার মুহাম্মদ মফিজ উল্যা সহ অন্যান্য অতিথি ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।