রাজশাহী-কলকাতা সরাসরি ট্রেন ও বাস চালু করা হবে- লিটন

0 ১৩৭
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীর ৪, ৫, ৬  ও ৭ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ৪নং ওয়ার্ডের ভেড়িপাড়া মোড়ে এদিনের ১ম পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। এরপর ৫নং ওয়ার্ডের কোর্ট স্টেশন মোড়ে ২য়, ৬নং ওয়ার্ডের বাকির মোড়ে ৩য় ও ৭নং ওয়ার্ডের চণ্ডীপুর প্লেসক্লাব মোড়ে ৪র্থ পথসভা করেন তিনি।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর গণসংযোগ ও পথসভায় সর্বস্তরের জনসাধারণের ঢল নামে। এ সময় রাজশাহীর উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার অনুরোধ জানান মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

পথসভায় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন,  রাজশাহীতে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, রাস্তাগুলো চওড়া হয়েছে, সড়ক বিভাজকে ফুল ফোটে, ড্রেন হয়েছে, লাইট লাগানো হয়েছে, নদীরধারে বিনোদনকেন্দ্রের উন্নয়ন করেছি। কিন্তু যেটা হয়নি, সেই কর্মসংস্থান এবার করতে চাই। আমাদের সকলের ছেলে-মেয়েদের কর্মের ব্যবস্থা করা এবার আমার প্রথম দায়িত্ব।

যদিও কর্মের বিষয়টি মেয়রের সরাসরি কাজ নয়।
তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, সেই দলের আমি প্রেসিডয়াম মেম্বার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করেন।  সেজন্য আমি এই অবহেলিত পিছিয়ে পড়া জনপদের জন্য শিল্পায়ন করতে চাই, বাণিজ্য আনতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে নওদাপাড়া এলাকায় বিসিক শিল্পনগরী-২ করে দিয়েছেন, চামড়া শিল্প পার্কের অনুমোদন দিয়েছেন। আগামীতে ৩ বছরের মধ্যে এগুলো উন্নয়ন করে, প্লট বরাদ্দ দিয়ে ব্যাপক শিল্পায়ন করতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমার একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। আপনাদের সকলের সহযোগিতা নিয়ে এই কাজটি করতে চাই।

সাবেক সফল মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনা মহামারি কারণে দেড় বছর পৃথিবীর স্থবির হয়ে পড়েছিল। আমরা তেমন উন্নয়ন কাজ করতে পারিনি। সারা পৃথিবীতে একই অবস্থা ছিল। এরপর যখন কাজ শুরু করলাম, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে যে উন্নয়ন করেছি, তা দৃশ্যমান।

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, পদ্মা নদীকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা দরকার। ভারতের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত নৌ বাণিজ্য চালু করতে দুই দেশ একমত হয়েছে। শিগগিরই এটি চালু হবে ইনশাল্লাহ। এটিকে আমি রাজশাহী পর্যন্ত নিয়ে আসতে চাই, এরপর ঢাকা পর্যন্ত। রাজশাহীতে নৌবন্দর করে ভারত থেকে পাথর, ফ্লাই অ্যাশ সহ যখন যেটা প্রয়োজন হবে সেটা আমদানী করা হবে। রাজশাহী থেকে অনেক পণ্য রপ্তানী করা যাবে। এটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসার হবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

তিনি আরো বলেন, পদ্মা নদী খননে ২০১৯ ড্রেজার এসেছিল। পাইপ কম থাকার কারণে সেটি চলে যায়। আমি এবার নির্বাচিত হলে পদ্মা নদী খনন করে নৌবাণিজ্য চালু করতে চাই।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য, বেড়ানোর জন্য ভারতের কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরে যান। সরাসরি বাস ও ট্রেন না থাকায় রোগীদের যেতে অনেক কষ্ট হয়। আগামীতে আমি নির্বাচিত হলে তিন মাসের মধ্যে রাজশাহী থেকে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন ও বাস চালু করতে চাই।

সাবেক রাসিক মেয়র লিটন বলেন, রাজশাহী ইতোমধ্যে দেশের মধ্যে একটি বসবাসযোগ্য শহর হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এখন শিল্পায়ন করে আপনার সন্তানদের জন্য উপার্জনের ব্যবস্থা করে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। সন্তানদের মুখে হাসি ফুটলে আপনার মুখেও হাসি ফুটবে। রাজশাহীর মানুষ আনন্দের সঙ্গে বসবাস করবে। রাজশাহী উচ্চ মানের একটি শহর হবে, শিক্ষার শহর, পরিবেশবান্ধব শহর, সবুজ শহর, সন্ত্রাসবিহীন শহর, মাদকমুক্ত শহর হয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মাথা উচু করে বাঁচতে চাই। সেই স্বপ্ন আপনাদের দেখালাম, আপনারাও দেখেন।

পথসভায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার, মহানগর আওয়ামী লীগের সৈয়দ শাহাদত হোসেন, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা,  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু, রাজশাহী মহানগর ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিুক, সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু স্থানীয় আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.