সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি-ধমকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি-ধমকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক। এগুলোতে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের একমাস পর থেকেই বিএনপি আমাদের সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বহুবার সরকারকে টেনে নামাতে চেষ্টা করে বিএনপিই জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে, তারাই দড়ি ছিঁড়ে পড়ে গেছে।’
আজ দুপুরে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া মৌসুমী আবাসিক এলাকায় আরসিসি ড্রেইনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন মন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত আওয়ামী লীগের পতন দ্রুত’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ সব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তারাই ঘি ঢেলেছিল। বিডিআর বিদ্রোহের সাথে বিএনপি এবং বিএনপিনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। বিডিআর বিদ্রোহ যেদিন হয়, সেদিন প্রত্যুষে বেগম জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং তারেক জিয়ার সাথে বহুবার কথা বলেছিলেন। সেই রেকর্ড আমাদের কাছে আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় থাকবে কি থাকবে না, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে কি করবে না, সেই সময় দেয়া না দেয়ার মালিক হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। সেজন্যই তিনি দেশ পরিচালনা করছেন।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জালিয়াতি ও ডাকাতি করেছে বলে মির্জা ফখরুলের অভিযোগ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে যত কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে সবকিছুই বিএনপি ঘটিয়েছে। তারা ইতিপূর্বে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল। এবার ঢাকা বারের নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে জয়লাভের কোনো আশা নেই বুঝেই তারা প্রথমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়, এরপর নির্বাচনী কার্যক্রমকে ভন্ডুল করার জন্য ব্যালট ছিনতাই ও নির্বাচনী প্যান্ডেলসহ সব স্থাপনা ভাঙচুর করে।’
‘২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে যেভাবে তারা নির্বাচনী কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল, ঠিক সেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেছে বিএনপি -এ জন্য তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন,’ বলেন সম্প্রচারমন্ত্রী।
এর আগে আরসিসি ড্রেইনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধনকালে চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরাসনের জন্য এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছেন। এটি ঢাকা শহরের জন্যও দেওয়া হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ চলছে, আশা করি আগামী মৌসুমে আগের মত জলাবদ্ধতা আর হবে না।
শহরের পরিচ্ছন্নতা ও নর্দমা সচল রাখা নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরের পৌনে এক কোটি মানুষ মিলে শহর ময়লা করলে সিটি কর্পোরেশনের ৪ হাজার কর্মীর পক্ষে তা পরিষ্কার রাখা সম্ভব নয়। আর পলিথিন ও বাসাবাড়ির ময়লা না ফেললে ড্রেইন সচল থাকবে।
১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী।