সহকর্মীদের হৃদয়ভেজা স্মৃতিচারণ নায়করাজকে নিয়ে

0 ১,৩০৫

আলমগীর,বিনোদন :
নায়করাজ রাজ্জাককে নিয়ে শনিবার এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয় এক স্মরণসভা। মহানায়কের এই স্মরণসভায় মিলিত হয়েছিলেন তারকারা। তারা নায়করাজের জীবনের নানা দিক নিয়ে হৃদয়ভেজা স্মৃতিচারণ করেছেন। নিজেরা কেঁদেছেন, অন্যদের কাঁদিয়েছেন।

এ স্মরণসভার আয়োজন করে চলচ্চিত্র পরিবার। নায়করাজের রুহের মাগফেরাত কামনা করে কাঙালিভোজ ও দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করা হয়। ছিল তার চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও।

চলচ্চিত্রাঙ্গনের ব্যক্তিবর্গের পাশাপাশি নায়করাজের ভক্ত ও শুভ্যানুধ্যায়ীরা এ আয়োজনে অংশ নেন।

মহানায়ককে স্মরণ করে স্মৃতিচারণে অংশ নেন নায়ক ফারুক, আলমগীর, সোহেল রানা, সৈয়দ হাসান ইমাম, চিত্রনায়িকা সুচন্দা, গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, নায়ক শাকিব খান, ফেরদৌস, ওমর সানি, সুব্রত, আলীরাজ, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি অভিনেতা মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক নায়ক জায়েদ খানসহ আরও অনেকে। আর নায়করাজের পরিবারের পক্ষ থেকে বড় ছেলে নায়ক বাপ্পারাজ ও ছোট ছেলে সম্রাট কথা বলেন।

নায়ক ফারুক বলেন, ‘নায়করাজ নেই, কিন্তু তার সৃষ্টিকর্ম রয়ে গেছে। আছে তার বিখ্যাত সব চলচ্চিত্র ও গান। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে এ প্রজন্মের শিল্পীরা যেমন মূল্যায়ন করছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মও বিশ্লেষণ ও গবেষণা করবে।’

নায়ক আলমগীর বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিভাবককে হারিয়েছি। তিনি সব সময় স্বপ্ন দেখতেন চলচ্চিত্র পরিবার এক থাকবে। রাজ্জাক ভাইয়ের এ স্বপ্ন, আমাদের সবার স্বপ্ন।’

আলমগীর বলেন, ‘ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া হতে পারে, দ্বন্দ্ব হতে পারে, এমনকি মারামারিও হতে পারে। কিন্তু রাজ্জাক ভাইয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে, আমাদের এই ভাইয়ে-ভাইয়ের দ্বন্দ্ব মিটমাট করে চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

সুচন্দা বলেন, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের পথিকৃৎদের একজন রাজ্জাক ভাই। তার অবদান ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি চলচ্চিত্র নিয়ে ভেবেছেন।’ তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে অনেক ছবিতে জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ করেছি। সব স্মৃতি ভেসে উঠছে। আমি কিছুতেই মানতে পারছি না নায়করাজ আর নেই। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।’

গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যদি কোনোদিন বিশ্বের দরবারে স্থান করে নিতে পারে, তাহলে সত্যিকার অর্থে রাজ্জাক ভাইয়ের স্বপ্ন সার্থক হবে, তার আত্মা শান্তি পাবে।’

নায়ক রুবেল বলেন, ‘আমরা একজন অভিভাবক হারালাম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের যে শুভ সূচনা হয়েছিল তার একটি অধ্যায়ের অবসান হলো।’

শাকিব খান বলেন, ‘এখনকার প্রজন্ম এবং আগামী যত প্রজন্ম আসবে তাদের কাছে নায়করাজ রাজ্জাক প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমরা একজন আইডল হারালাম। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

ওমর সানী বলেন, ‘নায়করাজ রাজ্জাককে আমরা অনেক অবেলায় হারালাম। তার আরও অনেক কিছু দেয়ার ছিলো চলচ্চিত্রকে। তরুণ প্রজন্মের আইডল হিসেবে তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন।’

রাজ্জাকের বড় ছেলে বাপ্পারাজ বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের বর্তমান সংকট নিয়েও কথা বলেন। তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনের সবার রেষারেষি মিটিয়ে সব নিষেধাজ্ঞা ও মামলা তুলে নেয়ার আহ্বান জানান।

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক গত সোমবার কার্ডিয়াক অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তাকে বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.