চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : ১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস। দীর্ঘ নয় মাস মরণপন যুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে মুক্ত করেছিলো বাংলার দামাল ছেলেরা। উড়িয়েছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচী গ্রহন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭ নং সেক্টরের অধীন ২ টি সাব সেক্টরের মধ্যে মোহদিপুর সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এবং দলদলী সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন লেঃ রফিক। ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার অন্যান্য এলাকা শত্র“ মুক্ত হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে যায় পাকিস্থানী সেনা ও তাদের অনুগত রাজাকারদের দখলে। ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহর দখলের জন্য মহানন্দা নদীর ওপারে বারঘরিয়ায় অবস্থান নেয়। ১৪ ডিসেম্বর ভোর রাতে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তার বিশাল বাহিনীকে ৩ ভাগে ভাগ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য আক্রমন শুরু করেন। তিনি একটি ছোট নৌকা নিয়ে মহনন্দা নদী পার হয়ে রেহাইচর গ্রামে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং শত্র“দের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করতে করতে সামনের দিকে এগুতে থাকেন। ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধার পুরোপুরি কেটে যাওয়ার আগেই সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্থানী বাহিনীর একটি বুলেট ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের কপালে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন। বিজয় দিবসের ১ দিন আগে চলে যান তিনি না ফেরার দেশে। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সাড়াশী অভিযানের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক সেনারা। ১৫ ডিসেম্বর হাজারো মুক্তিযোদ্ধার অশ্রুশিক্ত ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরকে তার অন্তীম ইচ্ছে অনুযায়ী সমাহিত করা হয় ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে। পরে তার বীরত্বগাঁথার জন্য রাস্ট্র তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে সম্মানিত করে। ১৪ ডিসেম্বর রাতেই পাকিস্থানীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে চলে গেলে ১৫ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করে। এর মধ্য দিয়েই শত্রু মুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় মহান বিজয়। -কপোত নবী, ১৫ ডিসেম্বর রোববার, ২০১৯।
Sign in
Sign in
Recover your password.
A password will be e-mailed to you.
Prev Post
Next Post