আজ রৌমারী ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ি দিবস

0 ৪৩৭

মাজহারুল ইসলাম, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: আজ ১৮ এপ্রিল (সোমবার) ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস। ২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে বড়াইবাড়ী গ্রামে ঢুকে নারকীয় তান্ডব চালায়। অকুতোভয় বিডিআর ও গ্রামবাসীর মিলিত প্রতিরোধে পর্যুদস্ত হয় আগ্রাসনকারী বিএসএফ। নিহত হয় বাংলাদেশের তৎকালীন তিন বীর বিডিআর জোয়ান। ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১৬ জন বিএসএফ সদস্য। তখন থেকে এই দিনটি পালিত হয় ‘ ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে।

উক্ত দিবসটি পালন উপলক্ষে রৌমারীতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য র্যালি, বড়াইবাড়ী বিওপি ক্যাম্পে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল। বড়াইবাড়ি দিবস উৎযাপন কমিটির পক্ষ থেকে মো, আবুল হেসেন ,আব্দুর রাজ্জাক দুলু আমজাদসহ অনেকে দিবসটির আযোজন করেন। উক্ত আযোজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক এমপি রহুল আমিন, রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভার) এবিএম সারোয়ার রাব্বি, উপজেলা চেয়ারম্যান ঈমান আলী ইমন, রৌমারী থানা অফিসার ইনচার্জ রুপকুমার সরকার।

সেদিন ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর রাতে ভারতীয়র সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ১০৬৭ সীমান্ত পিলার অতিক্রম করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে অনধিকার প্রবেশ করে। এসময় সীমান্ত ঘেষা ফসলী জমিতে বোরো ক্ষেতে পানি / সেচ দিচ্ছিলেন মিনহাজ নামের এক যুবক। বিএসফ মিনহাজকে ডেকে বিজিবি ক্যাম্প এর নিশানা জানতে চায়। চালাক মিনহাজ বিএসএফকে ক্যাম্প দেখিয়ে দেয়। এই সুযোগে মিনহাজ দূত মিনহাজ বিজিবি ক্যাম্পে এসে ভারতীয় বিএসএফ ক্যাম্পের দিকে আসছে বলে খবর দিয়ে দৌড়ে গ্রামে গিয়ে গ্রাম বাসিকে জানান দেন। এদিকে বিএসএফ বড়াইবাড়ী গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা চালায় ও বাড়ি-ঘর নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেয়।

পরে বিওপি ক্যাস্পের দিকে অগ্রসর হলে বিজিবির তাক করে থাকা মেশিন গানের গুলিতে মারা যায় ভারতয়ি ১৬ বিএসএফ জোয়ান। ওই দিনের াণ্যায় ভাবে হামলার দাঁত ভাঙা জবাব দিয়েছিল বিডিআর-জনতা। আর সেই প্রতিরোধে বিএসএফ এর ১৬ জোয়ানের লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তক্ষীরা। বাংলাদেশ বিজিবি’র পক্ষে শহীদ হন ৩৩ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সিপাহী আব্দুল কাদের। এছাড়া আহত হন বিডিআর এর হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহী হাবিবুর রহমান ও জাহিদুরনবী।

সেদিন বিএসএফ এর তান্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯টি বাড়ি। সরকারি হিসেবে মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ টাকা। এ ঘটনার ২৩ বছর অতিক্রান্ত হলেও সীমান্তে সেই দিনের বর্বরচিত হামলার কথা মনে পড়লে আজও ঘুম থেকে ছিটকে উঠে অনেকে। আজও কাটেনি সীমান্তর আতঙ্ক। পূরণ হয়নি সরকারি আশ্বাস। দেয়া হয়নি কড়া নিরাপত্তা, সুবিধাসহ নিরাপদ আবাসন হয়নি অনেকেরই। তবে সাবেক এমপি রুহুল আমিনের সময় ওই অঞ্চলে সীমান্ত সড়ক ও বিদ্যুৎ এর অনেকটা উন্নয়ণ হয়েছে।
মাজহারুল ইসলাম

Leave A Reply

Your email address will not be published.