ইসরায়েল থেকে ‘অ্যারো থ্রি’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিচ্ছে জার্মানি

0 ১৮০
ইসরায়েলের ‘অ্যারো থ্রি’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এএফপির ফাইল ছবি

ওয়াশিংটন ছাড়পত্র দেওয়ার পর ইসরায়েলের কাছ থেকে ‘অ্যারো থ্রি’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা কেনার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে জার্মানি৷ আগামীকাল বৃহস্পতিবারই (২৮ সেপ্টেম্বর) এ চুক্তি হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তথা ন্যাটোর আকাশসীমার সুরক্ষায় এটি হচ্ছে বড় পদক্ষেপ৷

অন্যদিকে, বিশেষ করে ডনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থানের সম্ভাবনার মুখে ইউরোপের সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আর আগের মতো নির্ভর করাও অবাস্তব হয়ে উঠছে৷ তাই বাধ্য হয়ে সামরিক প্রস্তুতি ও ক্ষমতা বাড়ানোর পথে এগোচ্ছে জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশ৷

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস গত বছরই ইউরোপের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমান হামলা প্রতিরোধ করতে নিরাপত্তা বলয় প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, ইসরায়েলের ‘অ্যারো থ্রি’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা রক্ষাকবচ হিসেবে উপযুক্ত৷ গত জুনে জার্মান সংসদের এক কমিটি এই ‘অ্যারো ত্রি’ কেনার পক্ষে রায় দেয়৷

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামীকাল বৃহস্পতিবার বার্লিনে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গালান্ট ও জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস ‘অ্যারো থ্রি’ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনার লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ গালান্টের মুখপাত্র মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন৷

৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি ইউরো অঙ্কের এই চুক্তি ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির নজির গড়তে চলেছে। সবকিছু পরিকল্পনামতো চললে জার্মানিসহ প্রতিবেশী দেশগুলো দুই বছরের মধ্যে ‘অ্যারো থ্রি’ এর ছত্রছায়ায় চলে আসবে৷ সেক্ষেত্রে শত্রুপক্ষের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র থেকে সুরক্ষার মাত্রা আরও বেড়ে যাবে৷ এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরেই শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রে সরাসরি আঘাত করে ধ্বংস করে দেবে৷

সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিক্রির অনুমতি দিয়েছিল৷ দুই দেশ যৌথভাবে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তুত করায় জার্মানিকে বিক্রির প্রশ্নে ছাড়পত্রের প্রয়োজন ছিল৷ ইসরায়েল এয়ারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিস ও যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে৷

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা শুরুর পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস প্রতিরক্ষা খাতের জন্য ১০০ কোটি ইউরো অঙ্কের এককালীন ব্যয়ের যে ঘোষণা করেছিলেন, সেই অর্থও এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কাজে লাগানো হবে৷ ইইউ তথা ন্যাটোর বেশ কিছু দেশ জার্মানির উদ্যোগে এই রক্ষাকবচের আওতায় আসার আগ্রহ দেখানোর ফলে প্রকল্পের আর্থিক ভার কিছুটা হলেও বণ্টন করা হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস বলেন, ন্যাটোর আকাশসীমা সুরক্ষা কাঠামোর মধ্যেই এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থান পাবে৷

ইসরায়েলের সঙ্গে জার্মানির এই সামরিক সহযোগিতা ঐতিহাসিক কারণেও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা মোশে প্যাটেল বলেন, ‘হলোকাস্ট বা ইহুদি নিধন যজ্ঞের ৭৮ বছর পর ইসরায়েল জার্মানির বাসিন্দাদের সুরক্ষার জন্য এক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করছে, এমন ঘটনা সত্যি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷’

Leave A Reply

Your email address will not be published.