গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় করতে হবে : মির্জা ফখরুল

১৩৯
গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশছোঁয়া দাম, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও সিন্ডিকেশনের যাঁতাকলে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় করতে হবে।

আজ বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক  কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের এমন প্রশ্ন অনেক বার শুনেছি, আপনার আন্দোলন বলতে আসলে কি বুঝান, এটা আমরা বুঝি না। আন্দোলন কি শুধু হরতাল, অবরোধ এই ধরনের বিষয়? এগুলো শুধু আন্দোলন নয়। মানুষকে আস্তে আস্তে তৈরি করে রাস্তায় নামামোটাই আন্দোলন। মানুষ যখন রাজপথ দখল করবে, তখনই আন্দোলন অর্থবহ হয়ে দাঁড়াবে।

আগামী ২৫ আগস্ট বাম দলের হরতালে বিএনপি সমর্থন দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ন্যায়সঙ্গত দাবির আন্দোলনে আমরা সব সময় সমর্থন করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচার আর অপশাসন দেশটাকে সত্যিকার অর্থেই অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকেই বাকশালিরা ধ্বংসের শেষ প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। বাগাড়ম্বর আর কাল্পনিক উন্নয়নের গল্প দেশের জনগণ আর শুনতে চায় না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যত অন্যায় অপকর্ম করেছে তার প্রায়শ্চিত্ত তাদেরকে করতে হবে। সম্প্রতি জ্বালানির দাম বাড়িয়ে তারা জনগণের বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের কিছু সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী চক্রের হাতে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনা জিম্মি হয়ে আছে। এ সরকারের জনগণের কাছে কোন দায়বদ্ধতা নেই বিধায় তারা জনগণের কল্যাণের তোয়াক্কা না করে নিদারুণভাবে নিষ্ঠুর ও নির্দয় হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরাচারী সরকারকে রাজপথের গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশে সত্যিকার অর্থে জনমানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহাসচিব বর্তমান নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চিত্র সবিস্তারে তুলে ধরে বলেন, ২০০৬ সালে এক কেজি মোটা চালের দাম ছিল গড়ে ১৫ টাকা। ২০২২ অর্থাৎ বর্তমানে মোটা চালের দাম গড়ে ৫৪ টাকা। মূল্যবৃদ্ধি ৩ গুণেরও বেশি। ২০০৬ সালে ১০০ টাকায় প্রায় ৭ কেজি মোটা চাল কেনা যেতো। বর্তমানে ১০০ টাকায় মোটা চাল কেনা যায় ২ কেজি। প্রায় ৫ কেজি কম চাল পাওয়া যায়। আয় সক্ষমতা যদি ২ গুণ বৃদ্ধি পায়। এরপরেও ২০০৬ সালের সমপরিমাণ ক্রয় সক্ষমতা অর্জন অসম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান।

Comments are closed.