নওগাঁয় শীতের গরম কাপড় বেচাকেনা বেড়েছে

0 ১০১
লোকমান আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি: বৈরি আবহাওয়ায় নওগাঁয় হঠাৎ করেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গরম কাপড়ের চাহিদা বাড়ায় দোকানে বেড়েছে ক্রেতাদের ভীড়। ব্যস্ত সময় পার করছে দোকানীরা। দিনে বিক্রি অন্তত ৩ কোটি টাকা। শীতের গরম কাপড় কিনতে সাধ্যের মধ্যে ক্রেতারা ছুটছেন শপিংমলের বিভিন্ন বিপনি-বিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে। এ বছর শুরুতে শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকলেও গত তিন দিনে বেড়েছে শীত। তবে শীত যত বাড়বে বেচাকেনা তত জমজমাট হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। এ বছর গরম কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্রেতারা।

বছরের শেষ সময়ে জেলায় শীতের তীব্রতা কিছুটা কম ছিল। তবে বৈরি আবহাওয়ায় হঠাৎ করেছে গত তিনদিন থেকে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বলা যায় উত্তরের জেলায় এখন পুরোদমে শীতের আমেজ বিরাজ করছে। শীত পড়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। শহরের আভিজাত্য গীতাঞ্জলি শপিং কমপ্লেক্স, দেওয়ান বাজার, আনন্দ বাজার ও কাপড়পট্টি সহ কয়েকটি শপিংমলগুলোতে বিভিন্ন গরম কাপড়ে পসরা দিয়ে সাজানো হয়েছে। এসব দোকানে গোলগলা ও হাই গলার গেঞ্জি, হুডি, সোয়েটার, মাফলার, জ্যাকেট, বেøজার, কাটিগান সহ অন্যান্য গরম পোশাক এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। বাচ্চাদের পোশাক দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা, জ্যাকেট তিন হাজার ছয় হাজার টাকা এবং বেøজার দুই হাজার থেকে সাত হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দরদাম করে কিনছেন ক্রেতারা। অনেকে তাদের পছন্দের পোশাক পেয়েও যাচ্ছেন।

জেলার ১১টি উপজেলায় প্রায় ১২শ পোশাকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমের দুইমামে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার শীতের পোশাকের বাণিজ্যের আশা ব্যবসায়িদের।

ব্যবসায়িরা জানান- জেলায় এ বছর শীত কিছুটা দেরিতে পড়ছে। শীতকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের নজর কাড়তে বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় দিয়ে দোকানগুলো সাজানো হয়েছে। শীত কম থাকায় বেচাকেনা কম হচ্ছিল। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। তবে হঠাৎ করে শীত বাড়ায় বেচাকেনা বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের দাম বাড়ায় বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। তবে শীতের তীব্রতা যদি না বাড়ে অনেক ব্যবসায়ি লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

এদিকে শীতে গরম কাপড় কিনতে নি¤œ ও মধ্যবিত্তরা ছুটছেন ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। সাধ্যের মধ্যে শিশুদের শীতের পোশাক পেয়ে যাচ্ছেন। যেখানে ১০০-৪০০ টাকা মধ্যে বাচ্চাদের জন্য মোটা পায়জামা, হাইগলার গেঞ্জি ও টপস পাওয়া যাচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রোতারা। তবে বেচাকেনা ভাল বলে জানান ফুটপাতের ব্যবসায়িরা।

শহরের ব্রীজ মোড় ফুটপাতের পোশাকের এক দোকানী বলেন- গত দুই থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। প্রতিদিন ৪-৬ হাজার টাকা বেচাকেনা হচ্ছে। সাধ্যের মধ্যে বাচ্চাদের জন্য ১০০-৪০০ টাকার মধ্যে শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।

ব্যবসায়ি সাদাত আহমেদ বলেন- এ বছর লাগাতার হরতাল-অবরোধ। তার মধ্যে শীতের প্রকোপ কম। শীত কম থাকায় প্রতিদিন বেচাকেনা ২০-২৫ হাজার টাকা। বিক্রি কম হওয়ায় বলা যায় লোকসান হচ্ছে। তবে শীত বাড়ায় বিক্রি বেশি হলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো ইনশাল্লাহ।

পাইকারি ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলাম তোতা বলেন- শীত মৌসুমে কেন্দ্র আরো এক মাস আগে প্রায় তিন কোটি টাকার বিভিন্ন ধরণের পোশাক কিনা হয়েছে। তবে বেচাকেনা খুবই মন্দা ছিল। গত চারদিন আগেও কোটি টাকার মতো বিক্রি হয়েছিল। পোশাক নিয়ে দুশ্চিন্তায় মধ্যে ছিলাম। তবে হঠাৎ শীত পড়ায় দুশ্চিন্তা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। ব্যবসায়িরা মালামাল কিনতে আসছে। তবে এ বছর জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেশি।

নওগাঁ গার্মেন্টস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ তুহিন আহম্মেদ বলেন- জেলা শহরে প্রায় দুইশতাধিক পোশাকের দোকান রয়েছে। এবছর দেরিতে শীত পড়েছে। শুরুতে শীত না থাকায় ব্যবসায়িরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে শীতের আমেজ পড়তে শুরু করায় বেড়েছে বেচাকেনা। প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে ২০-২৫ হাজার টাকা বেচাকেনা হচ্ছে। সে হিসেবে দিনে অন্তত ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হচ্ছে। তবে শীত বাড়লে বেচাকেনা আরো বাড়বে বলে জানান ব্যবসায়ি এ নেতা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.