নেশাগ্রস্ত হয়ে সাংবাদিককে মারধর করেন রাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

0 ৩৬

রাবি প্রতিনিধি: মধ্যরাতে নেশাগ্রস্ত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর উচ্চশব্দে গানবাজনা চলাকালে নিষেধ করায় একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে। নিউজ সংগ্রহের কাজে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাম্পাসে কর্মরত এক সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা চালায় হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আলামিন আকাশ ও তার অনুসারীরা। শনিবার (২৫ নভেম্বর) মধ্য রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলে দ্বিতীয় ব্লকে ২১৬ নং কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আজ বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের নিকট লিখিত এক অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রায়হান ইসলাম। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন আল-আমিন আকাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী এবং একই হলের ২১০ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দায়িত্বে আছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে,অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত দেড়টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের ২১৬ নম্বর কক্ষে বিকট আওয়াজে গানবাজনা, ও হইচই হচ্ছিল। তখন শব্দ সহ্য করতে না পেরে উপরতলার ৩১৫ নম্বর কক্ষ থেকে আবাসিক শিক্ষার্থী শাহাদত হোসেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল ইসলামকে নিয়ে নিচতলায় আসেন। তখন ২১৬ নম্বর রুম থেকে হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আকাশকে দেখে গান কোথায় বাজে তা জিজ্ঞেস করেন।

এ কথা জিজ্ঞেস করতেই উভয়ের ওপর চড়াও হন এবং তুইতোকারি শুরু করেন আকাশ। তখন উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি চলে। তখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ২১৬ নম্বর কক্ষ থেকে বের হন ইমরান ও সম্রাট এবং তর্কের এক পর্যায়ে শাহদতের কানে সজোরে থাপ্পড় দেন ইমরান। তখন পাশের কক্ষের (২১৭ নম্বর) রায়হান ইসলাম ঘটনাস্থলে যান এবং উভয়পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করলে তাকেও ধাক্কা দেন ইমরান ও সম্রাট। একপর্যায়ে টিশার্ট পড়তে ২১০ নম্বর কক্ষের দিকে গিয়ে অন্য সহযোগিদের ডাকেন আকাশ। তখন ২০৮ নম্বর কক্ষের নাজিম ও আমির হামজা সহ কয়েকজন মিলে অতর্কিতভাবে রায়হানকে মারধর করেন।

এতে তিনি মাথায় ও চোখে আঘাত পান। এ ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা ও অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি জানান তারা। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন আকাশ বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ হিল গালিব বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দায়িত্বরত সাংবাদিকদের গায়ে হাত দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেই নেতা সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়েছে সে নাকি হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। ছাত্রলীগের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্ছ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান এ ছাত্রলীগ নেতা।

এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কালকে সকলকে ডেকে ঘটনার বিবরণ শুনে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর হল প্রশাসনকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা প্রদান করেছি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.