পাবনায় তরুণী ধর্ষণ মামলায় চিকিৎসক গ্রেফতার

0 ৬৫
পাবনা প্রতিনিধি : এক তরুণীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ (জুনিয়র কনসালটেন্ট) ডা. মনিরুজ্জামান নয়নকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এর আগে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে তাকে শালগাড়িয়া হাসপাতাল সড়কের ভাড়া বাসা থেকে পাবনা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার ডা. নয়ন পাবনা সদর উপজেলার ক্যালিকো রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি ৩৩ বিসিএস সম্পন্ন করে মেডিকেল অফিসার হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ২০২০ সাল থেকে প্রেষণে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে তরুণী (২৩) জানান, তিনি একটি বেসরকারি ফ্যামিলি হিয়ারিং সেন্টারে চাকরি করেন। সেই সুবাদে ডা. মনিরুজ্জামান নয়ন রোগীদের পরীক্ষার জন্য তার কাছে রোগী পাঠাতেন।
রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডা. নয়নের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুযোগে গত সেপ্টেম্বর মাসের কোনো একদিন ডা. তাকে বলেন- তার (ডা. মনিরুজ্জামান নয়ন) স্ত্রী বেশ অসুস্থ এবং এজন্য তাকে বাসায় এসে একটু রান্নার কাজে সাহায্য করতে হবে।
তরুণী সরল বিশ্বাসে তার বাসায় যান এবং স্ত্রীর কথা জিজ্ঞাসা করলে ডা. জানান, তার স্ত্রী বাসায় নাই। এ সময় তরুণী বাসা থেকে বের হয়ে আসতে চাইলে ডা. বাসার প্রধান দরজা বন্ধ করে দেন এবং তাকে জোর করে বেডরুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
সেই ধর্ষণের দৃশ্য তিনি মোবাইলে গোপনে ধারণ করে রাখেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বাসায় নিয়ে একাধিকাবার ধর্ষণ করেন।
এরপর থেকে আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ডিলিট করতে তাকে অনুরোধ করেন ওই তরুণী। কিন্তু তিনি তা না করে বরং ভয় দেখিয়ে বারংবার ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় তার বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ অবস্থায় উপায়ন্তর না পেয়ে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
পাবনা থানার ওসি রওশন আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তরুণী মঙ্গলবার নিজে বাদী হয়ে পাবনা থানায় মামলা করেছেন এবং তার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে পুরোপুরি তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গ্রেফতার ডা. নয়নকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে ডা. নয়ন তার কাছ থেকে ব্যক্তিগত কাজের কথা বলে ছুটি নিয়েছেন। পরে আজ শুনেছি যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ডা. নয়নের স্বজনরা অভিযোগ করেন, মেয়েটি পরিকল্পিতভাকে তাকে ফাঁসিয়েছেন।
অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনা জেনারেল হাসপাতালের একটি সূত্র জানান, ডা. নয়নেরও কিছু সমস্যা আছে। তার প্রথম স্ত্রীর এসব কারণে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তিনি পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.