পাবনায় হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন

0 ১৯৩
পাবনা  প্রতিনিধি : পাবনার আতাইকুলা থানার চাঞ্চল্যকর আবুল কালাম হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে পাবনার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজের বিচারক বেগম শামীম আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আতাইকুলা থানার শ্রীকোল গ্রামের মো. মোতাহার হোসেন, মো. সাইদুল ইসলাম, আলাই, আক্কাছ আলী ফকির, শাহিন, রমজান আলী প্রামাণিক, মো. সাইফুল ইসলাম ও আতাউর রহমান।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মো. সাইদুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত প্রমাণিত না হওয়ায় শ্রীকোল দিয়ারপাড়ার আবুল কাশেম খানের ছেলে মোজাফফর হোসেন খানকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, পাবনার আতাইকুলা থানার শ্রীকোল গ্রামের সুরুজ আলীর বাবা আবুল কালাম তার পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য দণ্ডপ্রাপ্তদের সঙ্গে অলিখিত চুক্তিবদ্ধ হন। এজন্য দণ্ডপ্রাপ্তরা এক লাখ টাকা দাবি করে।
আবুল কালাম ৪০ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করেন বাকি ৬০ হাজার টাকা জমি উদ্ধারের পর দেওয়া হবে বলে জানান। এতে দণ্ডপ্রাপ্তরা ক্ষুব্ধ হন। কালামকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১৬ সালের ২৪ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দণ্ডপ্রাপ্তরা আবুল কালামকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্রীকোল পশ্চিমপাড়ায় কৌশলে ডেকে নিয়ে আসে এবং এক কোপে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
এ ঘটনায় আবুল কালামের ছেলে সুরুজ আলী বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সাক্ষি প্রমাণ শেষে পাবনার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বেগম শামীম আটজনের যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড এবং একজনকে খালাস প্রদান করেন ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন ও আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহজাহান আলী খান।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোতাহার হোসেনের ভগ্নিপতি আলম প্রামাণিক বলেন, এ ঘটনায় আসামিরা জড়িত না থাকলেও ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।
২০১৬ সালের ইউপি ভোটের সময় নৌকার প্রার্থী রইচ উদ্দিন খান ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস মুন্সীর নির্বাচনি জনসভা চলাকালীন সময়ে কে বা কাহারা তাকে হত্যা করে কেউ বলতে পারেনি।
সাক্ষ্যদাতারা মিথ্যা কথা বলেছে। আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। ইনশাআল্লাহ ন্যায় বিচার পাবো।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আদালতের এই আদেশে (রায়) খুশি।
তবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাজাহান আলী খান। তিনি বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে আমাদের মক্কেল ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি সেখানে আমাদের মক্কেল ন্যায় বিচার পাবেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.