পাবনায় কস্টিক সোডা, চিনি ও পানি মিশিয়ে দুধ তৈরি করায় জরিমানা

0 ১৪১
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দুধে কস্টিক সোডা, চিনি ও পানি মিশিয়ে দুধ তৈরি করার অপরাধে মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার(১২ এপ্রিল) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ হাসান খান এই অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় দেড় বস্তা কস্টিক সোডা ও ১৮ বস্তা চিনি উদ্ধার করা হয়। মাসুদ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও দুগ্ধ সমবায় সমিতির ম্যানেজার। মাসুদের অপর দুই সহযোগী একই গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক ও শামীম। অভিযুক্তরা আগে বিভিন্ন দুগ্ধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও নকল দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য তৈরির অপরাধে এই উপজেলায় একাধিক ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমান আদালতে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, ভবানীপুর গ্রামে মাসুদের বাড়িতে অপর দুই সহযোগী সিদ্দীক ও শামীম মিলে আসল দুধ থেকে ক্রিম সেপারেশন মেশিনের মাধ্যমে ক্রিম তুলে নেন।
এরপর পানির সাথে সয়াবিন তেল, কস্টিক সোডা ও চিনি দিয়ে অত্যন্ত আঠালো কৃত্রিম দুধ তৈরি করেন। পরে এসব নকল দুধ আসল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ঘনত্ব বাড়িয়ে কয়েক গুণ বাড়ানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রতিদিন সহস্রাধিক লিটার এই ভেজাল দুধ ঢাকায় পাঠায় তারা।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ বুধবার সকালে স্থানীয় কয়েকজন সংবাদ কর্মী ভবানীপুর গ্রামে মাসুদের বাড়িতে গিয়ে ভেজাল দুধ তৈরিতে সরঞ্জামাদির সন্ধান পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেন। কিছুক্ষণ পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে শুধুমাত্র কস্টিক সোডা জব্দ করে মাসুদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় মাসুদের সহযোগী শামীম ও সিদ্দিক পালিয়ে যান।
এদিকে ঘটনাস্থলে ভেজাল দুধ তৈরির সরঞ্জামাদি ১৮ বস্তা চিনি জব্দ না করে এবং মাত্র ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করায় চরম হতাশ এলাকার সাধারণ মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীরা বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে যারা দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ বাজারজাত করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতাচ্ছে। তাদের শাস্তি মাত্র ৫০ হাজার টাকা। যা তাদের একদিনের আয়ের সমানও নয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রুমানা আক্তার বলেন, কস্টিক সোডা মানব দেহে দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। একদিকে দুধের মূল উপকারী উপাদান সরিয়ে ফেলে ক্ষতিকর পদার্থ মিশিয়ে মারাত্মক অপরাধ করেছে তারা। শাস্তি হিসেবে তাদের প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া যেতে পারত। তবে প্রাথমিকভাবে তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। একই সাথে তাদেরকে নজরদারিতে রাখতে বলেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার।
এ ব্যাপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, প্রাথমিকভাবে এই জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তবে তাদেরকে নজরদারিতে রাখা হবে। পরে প্রয়োজন বোধে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মামলা দেওয়া হবে। চিনি জব্দ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, মানবিক কারণে কারণে এটা করা হয়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.