পুলিশের এএসআইয়ের নির্যাতনে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে দিনমজুর জুয়েল

0 ১৩৫
দুর্গাপুর প্রতিনিধি : পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) হামলা ও পাশবিক নির্যাতনে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে জুয়েল রানা (৩৮) নামের এক দিনমজুর। জুয়েল রানা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন আছেন। অবৈধভাবে জমি দখলের কাজে বাধা দেয়ায় জুয়েলকে বেধড়ক মারপিট ও পাশবিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার (১১ জুন) বিকেলে রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের পূর্ব সিংগা গ্রামে। আহত জুয়েল রানা ওই গ্রামের আব্দুর রশিদ মাস্টারের ছেলে। দিনমজুরের কাজ করে দিনাতিপাত করেন জুয়েল।
এদিকে, অভিযুক্ত এএসআই আশরাফুল ইসলাম বর্তমানে বগুড়া জেলার গাবতলী থানার বাগবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রে সংযুক্ত আছেন। কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে নিজ এলাকা রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের সিংগা গ্রামে গিয়ে অবৈধভাবে জমি দখলে নিতে গিয়েছিলেন তিনি।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের এএসআই আশরাফুল ইসলামের নিজ জেলা নওগাঁ হলেও বসবাস করেন রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের সিংগা গ্রামে। গত বুধবার (৭ জুন) নিজ কর্মস্থল বগুড়া জেলার গাবতলী থানার বাগবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে ছুটি নিয়ে দুর্গাপুরের সিংগা গ্রামে যান। এরপর রোববার (১১ জুন) বিকেলে ভাড়াটে ক্যাডার নিয়ে একই এলাকার ব্যবসায়ী বকুল ইসলামের সাথে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসা বিবাদমান জমি দখলে নিতে যান তিনি। এ সময় বকুল ইসলামের ভাইরা ভাই জুয়েল রানা ওই পথ দিয়ে যাওয়ার পথে এএসআই আশরাফুলকে জমি দখল কাজে বাধা দেন এবং বিষয়টি বকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এএসআই আশরাফুল সহ তার ভাড়াটে ক্যাডাররা জুয়েল রানাকে হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও ড্রেগার দিয়ে বেধড়ক মারপিট ও নির্যাতন চালায়।
পরে স্থানীয়রা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জুয়েল রানাকে উদ্ধার করে প্রথমে দুর্গাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানে জুয়েলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন। ওইদিন সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় জুয়েলকে। ঘটনার সময় আরও দুই নারীকে পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেয় এএসআই আশরাফুলের ক্যাডার বাহিনী।
রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুয়েল রানা অভিযোগ করেন, এএসআই আশরাফুল ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে অবৈধভাবে বিবাদমান জমি দখলে নিতে যান। জমি দখলে বাধা দেয়ায় ও বিষয়টি মোবাইল ফোনে তাঁর ভাইরা ভাই বকুলকে জানালে এএসআই আশরাফুল ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেন এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বলেন। এ সময় মোবাইল ফোনে বিষয়টি বকুলকে জানালে এএসআই আশরাফুল ক্ষিপ্ত হয়ে হাতুড়ি দিয়ে তাঁর  ডান চোখের উপরে আঘাত করে। সংগে সংগে ভাড়াটে ক্যাডাররাও তাঁকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে।
রামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, জুয়েলের ডান চোখের উপরে ছয়টি সেলাই দেয়া হয়েছে। ডান চোখ ফুলে দৃষ্টিশক্তিও লোপ পেয়েছে। বুকের বামপাশে গুরুতর আঘাত রয়েছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা যখম রয়েছে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এএসআই আশরাফুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন দিনমজুর জুয়েল রানা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.