বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৭ ॥ ৫ জন আহত

0 ৭৬০

sherpur-bogra-picaccident-13-nov-2016বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের মহিপুর বাজার এলাকায় গত শনিবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত সোয়া ১টার দিকে সার বোঝাই ও পুলিশ বহনকারী দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ ৭জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের কুন্দার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আশরাফ হোসেন বলেন, কুড়িগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মইনুল ইসলামের নেতৃত্বে নয়জন পুলিশ সদস্য ভাড়াকৃত ট্রাকযোগে ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পোশাক-পরিচ্ছদ ও ওয়ারলেস সেটের ব্যাটারী পাল্টানসহ নতুন কিছু মালামাল আনতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর উপজেলার মহিপুর বাজার এলাকায় গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে বগুড়া গামী সার বোঝাই ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৪৭৪৫) উক্ত স্থানে পৌঁছালে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন থেকে ছেড়ে আসা (খুলনা মেট্রো-উ-১১-০০৯২) পুলিশ সদস্য বহনকারী ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মোঃ সোহেল রানা’র নেতৃত্বে উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থল পৌছে নিহত ৫ পুলিশ সদস্যসহ আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) ভর্তি করে দেয়। এ সময় আহতদের মধ্যে আরো ২জনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং বাঁকী আহতরা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। নিহতরা হলো পুলিশ সদস্য নীলফামারী’র ডোমার উপজেলার শাহজাহান (৩৫), লালমনিরহাটের কালিগঞ্জের প্রণব (৩২), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ সদরের মুকুন্দপুর এলাকার রেজোয়ানের ছেলে আলমগীর (৩৩), সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার উপজেলার সামসুল (৩০), গাইবান্ধা’র ফুলছড়ি উপজেলার উদয়খালীর গ্রামের মৃত জাবেদ আলীর ছেলে সোহেল রানা (৩২) ও কুড়িগ্রাম সদরের পুলিশ সদস্য (ঝাড়ুদার) শ্যামল (৪২), পুলিশ বহনকারী ট্রাক চালক রংপুরের ডিমলা উপজেলার মাহিগঞ্জ কোতোয়ালী এলাকার আব্দুল গনীর ছেলে আব্দুর রহমান(৩২)।এ ঘটনায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাঈনুল ইসলাম, সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক রুবেল, সার বোঝাই ট্রাকের চালক পাবনা জেলার বসন্তপুর(আমিনপুর) এলাকার ইসাহাক মোল্লার ছেলে ফজলু(৩৮),হেলপার একই জেলার বিশ্বনাথপুর(আমিনপুর) এলাকার মোকছেদ আলীর ছেলে শাহাদৎ হোসেন(৩০) ও পুলিশের গাড়ীর হেলপার রংপুর জেলার তাজহাট কোতয়ালী’র জহির মোল্লার ছেলে মিজানুর রহমান আহত হয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। নিহত পুলিশ সদস্যরা কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ লাইনে ককর্মরত ছিল বলে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো: এরফান জানিয়েছেন। এদিকে রবিবার(১৩ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে রাজশাহী রেঞ্জের এ্যাডিশনাল ডিআইজি নিসারুল আরিফ, জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন, বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফ মন্ডল, হাইওয়ে পুলিশ সুপার ই¯্রাফিল হাওলাদার, শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সরোয়ার জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুঘর্টনা কবলিত ট্রাক দুটো শেরপুর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সদ্যপদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক বুলবুল ইসলাম ।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার ওসি খান মোঃ এরফান জানান, পুলিশ বহনকৃত ট্রাকের সাথে সার বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখী সংঘর্ষে ৭ নিহত হওয়ায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এই ঘটনায় রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় বগুড়ার হাইওয়ে পুলিশ সুপার ইসরাইল হাওলাদার ও সোয়া ৯টায় বগুড়া জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় হাইওয়ে পুলিশ সুপার ইসরাফিল হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, এই ঘটনায় দুটি ট্রাকের ড্রাইভারদের অসতর্ক থাকার কারনেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপর দিকে বগুড়া জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আহত নিহতরা কি অবস্থায় আছে দায়িত্বরত পুলিশদের সাথে কথা বলে কোন মন্তব্য রাজি হয়নি। দুর্ঘটনার সময় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে নিরসনে বেশ হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.