বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন শুরু কাল

0 ৯৯
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ছবি : এএফপি

এশিয়া কাপ ভারত ও শ্রীলঙ্কার জন্য শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মিশন হলেও, বাংলাদেশের জন্য হতাশার এক নাম। অন্তত অতীত পরিসংখ্যান তাই বলে। ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৮ তিনবার ফাইনালে খেলেও শিরোপা জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই আক্ষেপ ঘোচাতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপ মিশনে নামছে সাকিব আল হাসানের দল। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায়।

সামনেই ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। হাইব্রিড মডেলের এই এশিয়া কাপ তাই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার জন্যও প্রস্তুতির বড় মঞ্চ। এশিয়া কাপের স্কোয়াড বিবেচনায় শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যে কাউকে এককভাবে এগিয়ে রাখা কঠিন। কারণ দুদলেই বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার চোটের কারণে ছিটকে গেছেন। যার সবশেষ সংযোজন বাংলাদেশ ওপেনার লিটন দাস। তার পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়।

এবারের এশিয়া কাপের আগে বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই সপ্তাহের অনুশীলনের পাশাপাশি ম্যাচ ভেন্যু ক্যান্ডির পাল্লেকেলেতে দুদিন অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছে সাকিবের দল। ব্যাটে-বলে নিজেদের সেরা প্রস্তুতিই নিয়েছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। তবে প্রথম ম্যাচের আগে বেশ দুশ্চিন্তায় টিম ম্যানেজমেন্ট। লিটনের জায়গায় বিজয়কে খেলানো হবে নাকি নাঈম শেখ ও নবাগত তানজিদ তামিমকে দিয়ে ওপেনিং করানো হবে, তা নিয়ে দোটানায় দল।

জিততে হলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই বলে মত অধিনায়ক সাকিবের। বাংলাদেশ দল প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আমার দলের ওপর ভরসা আছে। আমাদের বোলারদের যেহেতু অভিজ্ঞতা আছে, সেটা আমরা হয়তো কাজে লাগাতে পারব। আসলে আমি একটা ডিপার্টমেন্টের ওপর নির্ভর করে জিততে চাই না। আমার কাছে মনে হয় আমাদের পেস বোলিং, স্পিনার, ব্যাটার ও ফিল্ডার সবগুলো বিভাগেই ভালো খেলতে পারলে ভালোভাবে জেতা সম্ভব। অলরাউন্ড ক্রিকেট খেলতে চাই। শুধু পেস বোলাররা বা ব্যাটাররা আমাদের জিতিয়ে দেবে এমনটা নয়। আমরা সব বিভাগে ভালো খেলেই জিততে চাই।’

বাংলাদেশের মতো একাদশ সাজাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে লঙ্কানদেরও। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাদুশঙ্কার মত বোলাররা না থাকা লঙ্কানদের জন্য বড় ক্ষতি বটে। ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় আত্মবিশ্বাসী ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এশিয়া কাপের অতীত পরিসংখ্যানও অবশ্য লঙ্কানদের এগিয়ে রাখছে। দুই দলের খেলা ১৫ ম্যাচের মধ্যে ১২টিতেই জয় স্বাগতিকদের। ২০২২ এশিয়া কাপে শেষ দেখায় দুই উইকেটে জয় পেয়েছিল লঙ্কানরা।

অবশ্য, ২০১৮ এশিয়া কাপে মুশফিকুর রহিম বীরত্বে ১৩৭ রানের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই জয় থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে সাকিবের দল। এছাড়াও ২০২১ এ ঘরের মাঠে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল মুশফিক-তাসকিনরা। তবে লঙ্কানদের বিপক্ষে জয় পেতে হলে সাকিব-মুশফিককেই নিতে হবে মূল দায়িত্বটা। কারণ এই দুই ক্রিকেটারই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে সফল।

পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া ৩৬টি ম্যাচের মধ্যে আগে ব্যাটিং করা ১৫টি ও পরে ব্যাটিং করা দল ২০টি ম্যাচে জিতেছে। এই মাঠে খুব একটা হাইস্কোরিং ম্যাচ হয় না। ২৫০-২৮০ রান এই মাঠে চ্যালেঞ্জিং স্কোর। তবে কিছুটা বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় এই ম্যাচে টস বড় ভূমিকা রাখবেই। বাংলাদেশ চাইবে জয় দিয়ে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করতে, অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা চাইবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। জমজমাট এই লড়াইয়ে কে হাসবে শেষ হাসি, উত্তরটা সময়ের হাতেই তুলে রাখা যাক।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: নাঈম শেখ, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কার সম্ভাব্য একাদশ : কুশল মেন্ডিস, দিমুথ করুরারত্নে, পাথুম নিসাশানকা, কুশল পেরেরা, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), চারিথ আসালাঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মাথিশা পাথিরানা, কাসুন রাজিথা, মাহিশ থিকশানা ও প্রমোদ মাধুশান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.