বাংলাদেশ ৪৫৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে থামাল

১৮৬

পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্রুত থামানো। নিজেদের লক্ষ্যে সফল হতে পারেনি মুমিনুলরা। লম্বা সময় ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে চ্যালেঞ্জিং স্কোর জমা করেছে প্রোটিয়ারা।

আজ শনিবার টেস্টের দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানে থামল দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছেন কেশব মহারাজ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০ রান করেছেন ডিন এলগার।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ১৩৫ রান দিয়ে ছয় উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। এই নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে দশমবার এক ইনিংসে ৫-এর বেশি উইকেট নেওয়ার স্বাদ পেলেন তাইজুল। এর মধ্যে দেশের বাইরে ৫ উইকেট নিলেন তৃতীয়বার। তাঁর সঙ্গে খালেদ আহমেদ নিয়েছেন তিনটি উইকেট।

৫ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৭৮ রান নিয়ে আজ দিন শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের শুরুতে কাইল ভেরাইনার স্টাম্প ভেঙে উইকেট উপহার দেন খালেদ আহমেদ। ৪৮ বলে ২২ রান করে থামেন ভেরেইনা। তবে দিনের শুরুতে উইকেট হারালেও রানের চাকা বেশ সচল ছিল স্বাগতিকদের। কেশব মহারাজ ও মুল্ডার মিলে কিছুক্ষণ টানেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ৩৩ রানে মুল্ডারের প্রতিরোধ ভাঙেন তাইজুল ইসলাম।

কিন্তু তাতেও রানের গতি কমেনি পোটিয়াদের। কেশব মহারাজ ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং চালান। তাতে বড় স্কোর পেয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় সেশনে গিয়ে মহরাজের প্রতিরোধ ভাঙেন তাইজুল। বাংলাদেশি স্পিনারকে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন মহারাজ। তবুও আউট হওয়ার আগে ৯৫ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন মহারাজ। তিনি ফিরলে টেলএন্ডারদের ওপর ভর করে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এর আগে গতকাল শুক্রবার টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনে মাত্র এক উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে নিয়েছে দুটি উইকেট। আর, শেষ সেশনে নিয়েছে দুটি উইকেট। গতকালই তাদের দলীয় রান প্রায় তিনশর কাছাকাছি করে নেয় ডিন এলগারের দল। আজ শনিবার সেটা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই লক্ষ্যে বেশ সফল প্রোটিয়ারা।

গতকাল টস হেরে ফিল্ডিং নামা বাংলাদেশ ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইকেট পেতে পারত। নিজেদের ভুলে সেটা হয়নি। অবশ্য পরে আর ভুল করেনি বাংলাদেশ। খালেদের বলে কাটা পড়েন সারেল এরউইয়া। প্রোটিয়াদের দলীয় ৫২ রানে কট বিহাইন্ড করে এরউইয়াকে ফেরান খালেদ। চার রানে জীবন পাওয়া এরউইয়া ৪০ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেন। প্রথম সেশনে এ একটি উইকেটই পায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় সেশনে প্রোটিয়াদের দুই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দুটি উইকেটই পান তাইজুল ইসলাম। ওপেনিংয়ে নেমে যাওয়া ডিন এলগারকে নিজের প্রথম শিকার বানান তাইজুল। বাংলাদেশি স্পিনারের বল থার্ড ম্যান দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন এলগার। কিন্তু, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় লিটন দাসের গ্লাভসে। ৮৯ বলে ১০ চারে ৭০ রান করে সাজঘরে ফেরেন এলগার। এরপর পিটারসেনকে এলবির ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন এই স্পিনার। ১২৪ বলে ৬৪ রান করে বিদায় নেন পিটারসেন।

প্রথম দুই সেশনে মাত্র তিন উইকেট পায় বাংলাদেশ। সঙ্গে বাড়ে রানের চাপও। তাই, শেষ সেশনে উইকেট নেওয়ার খোঁজেই ছিল বাংলাদেশ। তবে, তৃতীয় সেশনে জমে যায় তেম্বা বাভুমা ও রায়ান রিকেলটনের জুটি। এ জুটি লম্বা সময় ধরে ভোগায় বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙেন তাইজুলই। ৪২ রানে আউট করেন রিকেলটনকে। এরপর বাভুমাকে ৬৭ রানে খালেদ বিদায় করলে অন্তত কিছুটা স্বস্তি পায় বাংলাদেশ। তবে সেই স্বস্তি আজ স্থায়ী হলো না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস : ৯০ ওভারে ৪৫৩ (এলগার ৭০, এরউইয়া ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরাইনা ২২, মুল্ডার ৩৩, মহারাজ ৮৪, সিমন ২৯, উইলিয়ামস ১৩, অলিভার ০; তাইজুল ১৫০-১০-১৩৫-৬, ইবাদত ২৮-৩-১২১-০, মিরাজ ২৬.২-৪-৮৫-১, খালেদ ২৯-৬-১০০-৩ )।

Comments are closed.