বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে- পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

0 ১০১

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে M  The Role of Science and Technology Towards 4IR শীর্ষক এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা ও সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোঃ সাহেদ জামানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোঃ সুলতান-উল-ইসলাম ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোঃ হুমায়ুন কবীর।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের সহআহ্বায়ক পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক এম ছায়েদুর রহমান। সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক মোঃ আশরাফুল ইসলাম খান (পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগ), অধ্যাপক মোঃ সাবিরুজ্জামান (পরিসংখ্যান বিভাগ) ও অধ্যাপক তারান্নুম নাজ (ফার্মেসী বিভাগ)।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রথম দিনে একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

এছাড়া এদিন ২২টি টেকনিক্যাল সেশন এবং দ্বিতীয় দিনে মূল প্রবন্ধসহ ১০টি একাডেমিক সেশনে মোট ৪২৩টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে বলে নির্ধারিত আছে। এর মধ্যে ২০৭টি সরাসরি উপস্থাপন ও ২১৬টি পোস্টার রয়েছে। এছাড়া একটি প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনের সেশনসমূহ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন, সত্যেন্দ্রনাথ বোস একাডেমিক ভবন, ড. মুহাম্মদ কুদরাত-ই-খুদা একাডেমিক ভবন ও ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ও বিদেশ থেকে প্রায় ২৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গবেষক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

সম্মেলন উদ্বোধন করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকার দেশের সুষম উন্নয়ন ও সেই উন্নয়নকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সমন্বয় করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে এসব পরিকল্পনার সুফল দৃশ্যমান হয়েছে। যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ২৫ হাজার মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ হয়েছে। এর ফলে শিল্প ক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস আছে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যেমন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। দেশে বর্তমানে প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার জন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে দেশে থেকে বিদেশে সেবা দান করছে। এর মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নে ব্যয় করা যাচ্ছে।

সরকারের গৃহিত আরো যেসব পদক্ষেপ আছে তার মধ্যে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো, সমাজের পিছিয়ে পড়া ও দুর্গত মানুষের মধ্যে সুরক্ষা ব্যবস্থা বাড়ানো, শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করা, দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন অবকাঠামো যেমন রেলপথ ও সেতু নির্মাণ, বিমান বন্দর, নদীর তলদেশে টানেল, সড়ক ও মহাসড়ক, ফ্লাইওভার নির্মাণ ইত্যাদি। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এক যুগান্তকারী প্রভাব পড়বে।

সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রাবি উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শুরুতে আমাদের কাছে একটি কথার কথা হিসেবে এলেও বাস্তবক্ষেত্রে এটি আজ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাড়িয়েছে। সরকারের গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নিরন্তর গবেষণা ও উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও কারিগরী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহকে উচ্চশিক্ষায় সংযোজন ইত্যাদির মাধ্যমে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হয়েছে।

এর ফলে ব্যবসায় উদ্যোগ বা স্টার্টআপের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ মানুষ দেশের জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে, নিরবিচ্ছিন্ন ও সস্তা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা আজ বাস্তবের মুখোমুখি হয়েছে। উপাচার্য এই অর্জনের পাশাপাশি স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরন্তর গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। সেই লক্ষ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.