ভুল’ চিকিৎসায় পাবনায় প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা

0 ১২৫
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আলো জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ওই প্রসূতির স্বজনেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
এ সময় তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছেন পাবনা সিভিল সার্জন।
বুধবার ঈশ্বরদী হাসপাতাল রোডে আলো জেনারেল হাসপাতালের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ফজলে রাব্বির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী অন্তরা খাতুনকে আলো জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওইদিনই সন্ধ্যায় হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা ও তার স্বামী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের তত্ত্বাবধানে সিজার অপারেশন করা হয়।
অপারেশনের পরপরই রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে রাজশাহী নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
স্বজনদের অভিযোগ, রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া ভালোভাবে করা হয়নি। চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ফজলে রাব্বির নিজ বাড়ি সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে আলো জেনারেল হাসপাতালের সামনে গিয়ে মানববন্ধনের চেষ্টা করেন তারা।
এ সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক কর্মচারীর নেতৃত্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা ও মারধর করেন। এরপর তারা সরে গিয়ে ঈশ্বরদী থানা ও ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন।
রোগীর স্বামী ফজলে রাব্বী ও শাশুড়ি জান্নাতুল ফেরদৌস রুনু বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ওষুধ কিনতে বাইরে যেতে বলেন। এরপর আমরা এসে দেখি রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়েছে।
আমাদের ওষুধ না নিয়েই তাদের ওষুধ দিয়েই রোগীকে অপারেশন করা হয়। রোগীকে ঠিকমতো অ্যানেস্থেসিয়া করা হয়নি। অপারেশনেরে পরপরই রোগী বাঁচাও বাঁচাও বলে দুইবার চিৎকার দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাড়াহুড়ো করে অপারেশন করে যখন দেখে রোগীর অবস্থা খারাপ তখন তাকে রেফার্ড করে দিয়েছে।
আমরা রাজশাহীতে নেওয়ার পথেই রোগী মারা যায়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। যাতে আর কেউ এভাবে মৃত্যুবরণ না করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা ও ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের চেম্বারে পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের সার্বিক দায়িত্বে থাকার পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক কর্মচারী।
তিনি জানান, তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা ধান্দা করার জন্য ও হাসপাতালের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এসব অভিযোগ ও মানববন্ধন করেছেন। তাদের মানববন্ধনে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমন অভিযোগের পরপরই হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেন পাবনা সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান।
তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.