মহাদেবপুরে ইরি-বোরো সেচে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার অভিযোগ

0 ৮৪

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালিত গভীর নলকূপের মালিকদের বিরুদ্ধে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে চাষের জমিতে সেচের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার জোয়ানপুর মৌজায় সেচ প্রদানকারী এস. এম আলী মর্ত্তুজা (রঞ্জু) হালখাতা করে প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতির নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মো. মোমরেজ আলী জানান, হাসানপুর ব্লক এ চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২শ ৩০ হেক্টর জমিতে। সে হিসেবে ওই ব্লকে ৯ হাজার ২শ ২৫ বিঘা জমিতে ইরি- বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ওই ব্লকের আওতায় ২৫টি গভীর নলকূপ, ব্যক্তি মালিকানাধীন ৪৫টি বিদ্যুৎ চালিত ও ডিজেল চালিত ২১০টি নলকূপ রয়েছে।

উপজেলা সেচ কমিটি সূত্রে জানায়, সেচ কমিটির সভায় এ বছর বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত উভয় ধরণের গভীর ও অগভীর নলকূপের ক্ষেত্রে উঁচু জমির জন্য ১ হাজার ৪শ ও নিচু জমির জন্য ১ হাজার ২শ টাকা সেচ খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্ত সেচ কমিটির নির্দেশ উপেক্ষা করে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জোয়ানপুর ও বিহার মৌজায় গভীর নলকূপ ও ব্যক্তিমালিকানাধীন উভয় নলকূপের অপারেটররা বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকা করে আদায় করছেন।

জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক মাসুম, আবু বক্কর, ফারুক, রমজান, মোশারফসহ ৩০-৩৫ জন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ওই গ্রামের ব্যক্তিমালিকানাধীন নলকূপের মালিক এস. এম আলী মর্ত্তুজা (রঞ্জু) পরিচালিত গভীর নলকূপের অপারেটর আলাউদ্দিন কৃষকদের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকার করে আদায় করছেন। কৃষকরা উপজেলা সেচ কমিটির নির্ধারিত রেট অনুযায়ী টাকা দিতে চাইলে আলাউদ্দিন তা নিতে অস্বীকার করে এবং পরবর্তীতে তাদের জমিতে সেচ দিবে মর্মে হুমকী প্রদান করে।

তারা আরো অভিযোগ করেন, শুধু আলাউদ্দিনই নয়, ওই এলাকার বরেন্দ্র বহুমুখী কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপ ও ব্যক্তিমালিকানাধীন পরিচালিত, মাসুম সরদার, আহসান হাবীব, লুৎফর রহমান, জাকের উদ্দীন, তৈয়ব আলী, জিয়াউর রহমান, জারজিস আলম, এজাহারুল, আফসার উদ্দীন, ইদ্রিস আলী, রবিউল ইসলামসহ অন্যান্য অপারেটররাও সেচ কমিটির নির্দেশনা না মেনে বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকা করে আদায় করছেন।

এ বিষয়ে অপারেটর আলাউদ্দিন বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকা সেচচার্জ নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, লেবার খরচসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় সেচচার্জ একটু বেশি নিচ্ছেন। তবে অনেকেই ২ হাজার টাকা দেয়নি, কেউ কেউ ১৭শ, ১৮শ টাকাও দিচ্ছেন। এ বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী কর্তৃপক্ষ মহাদেবপুর যোনের সহকারি প্রকৌশলী মো. ইমদাদুল হককে বারবার মোবাইল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জানতে চাইলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু হাসান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সবার মতামতের ভিত্তিতে সেচচার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। অপারেটরদের অভিযোগ, এ রেটে তাদের পোষাচ্ছে না অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন সেচচার্জ অনেক বেশি আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বসে একটা সমাধান করে দেয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.