মহাদেবপুরে সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ

0 ১৩০

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে ইভটিজিংয়ের অপবাদ দিয়ে দশম শ্রেণির এক স্কুল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত ওই শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার উপজেলার জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে।

সূত্র জানায়, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফ হাসান (১৫) অন্যান্য দিনের মত গত বুধবার সকাল ৯ টার দিকে বিদ্যালয়ে আসলে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাসান আলী তাকে প্রধান শিক্ষকের রুমে ডেকে নেন। সেখানে বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে বেদম মারপিট করে। এতে তার দুই হাতে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলাফোলা ও কালশিরা দাগ পড়ে জখম হয়।

এ ঘটনার খবর পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবা জাহাঙ্গীর আলম স্কুলে ছুটে গিয়ে তার ছেলেকে মারপিটের কারণ জানতে চাইলে সভাপতি হাসান আলী তার কাছে রক্ষিত স্টিলের রড বের করে তাকেও পিটানোর হুমকী দেন। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য ভয়-ভীতি প্রদান করেন। সভাপতি ও তার পেটুয়া বাহিনীর ভয়ে ওইদিন তিনি তার ছেলেকে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে নিয়ে আসতে পারেননি। অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষার্থী মারুফকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত মারুফের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোন মেয়েকে তার ছেলে ইভটিজিং করেছে তা জানতে চাইলেও সভাপতি তা বলতে পারেননি, কিংবা ওই মেয়েকে হাজির করাতে পারেননি। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকার লোকজন ও অভিভাবকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, তার বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। এর আগেও সভাপতি কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অভিযুক্ত হাসান আলী ওই শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে পিটানোর কথা স্বীকার করে বলেন, অপরাধীর বিচার তিনি নিজ হাতে করেছেন। ইভটিজিংএর শাস্তি এ রকমই হওয়া উচিত। কোন মেয়েকে ইভটিজিং করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের সব মেয়েকেই সে ইভটিজিং করেছে। এর মধ্যে তার ভাতিজিও রয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনার সময় তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কোন শিক্ষার্থীকে পিটানোর অধিকার নেই।

পরে অবশ্য বিষয়টি মিমাংসার উদ্যোগ নিয়েও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, মৌখিক ভাবে তিনি বিষয়টি শুনেছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.