রৌমারীতে ধানের কি অপরাধ বিষ প্রয়োগে পুড়ে দিলো ধান

0 ৫৩১

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউয়িননের বারবান্দা গ্রামের কলাবাড়ি মৌজার ৩৮৩ নং খতিয়ানের ১০৭৪ নং দাগের অংশে হামিদা খাতুনের মোট ৩৬ শতাংশ জমির ধান রাতের আধারে বিষ প্রয়োগে পুড়ে দিলো সৎ ছেলেসহ পরিবারগণ। রমজানের শুরুর দিকে পারিবারিক কলহের জেরে প্রকাশ্যে নষ্টের হুমকির মাধ্যমে ধানে বিষ প্রয়োগের ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন হামিদা। থানায় অভিযোগ দায়ের। এলাকার মাতাব্বরগণ বিচারের দায়ভার নিলেও রহস্যজনক কারনে টালবাহানায় ঘুরাচ্ছে ভুক্তভোগি পরিবারকে।

অভিযোগ সুত্রে ও সরেজমি গিয়ে জানা গেছে, স্বামী সোবহান হোসেনের মৃত্যুর পর সৎ ছেলে আব্দুস সালাম ও নাতী মনির হোসেন, সাইদ মিয়া আমার পরিবারের ছেলেদের সাথে দীর্ঘদিন থেকে জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এদিকে আমার দুটি ছেলে দেশের বাইরে থাকায় তাদের ক্ষমতাবলে স্বামীর দেয়া জমি প্রায় সময় এসে জবরদখল করে নেয়ার চেষ্টা করে। এলাকার ইউপি সদস্য ও স্থানীয় মাতাব্বরগণদের এবিষয়ে একাধীকবার অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

চলতি বোরো মৌসুমে মাঘ মাসের শেষের দিকে কলাবাড়ী মোজার সাবেক ৩৮৩ নং খতিয়ানের ১০৭৪ নং দাগের অংশের ৩৬ শতাংশ জমির মধ্যে ২১ শতাংশ লাল চাঁনের নিকট ও ১৫ শতাংশ দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিন্দুরচর গ্রামের আব্দুস সালামের নিকট জমি বর্গা হিসাবে তারা চাষ করে আসছে। এমতাবস্থায় রমজানের শুরুরদিকে বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা ছাড়াই জহুরুল মাষ্টার, এন্তাজ আলীসহ কয়েকজনের সামনে বিভিন্ন হুমকি ধামকি ও ফসলি জমি বিনষ্ট করবে বলে বলেন।

বিধিবাম, কয়েকদিন পর জমিতে গিয়ে দেখি, জমির ধান ঝিমিয়ে পড়েছে। জমিতে বিষ প্রয়োগের হুমকি ও জমির ধান ঝিমিয়ে পড়ার বিষয়টি মাতাব্বরগনদিগকে জানানো হয়েছে। ধান পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় কোন প্রতিকার না পেয়ে রৌমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। থানা পুলিশ তদন্তপুর্বক মিমাংশার লক্ষে থানায় সালিশি বৈঠক বসলে, অফিসার ইনচার্জ রূপ কুমারের সাথে স্থানীয় মাতাব্বরগণ গ্রামেই সমাধান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি নিয়ে চলে যান। এদিকে দীর্ঘ একমাস অতিবাহিত হলেও ইউপি সদস্য ফিরোজ আহমেদসহ গ্রামের মাতাব্বরগণ বিচারের নামে বিভিন্ন টালবাহানা করে সময়ক্ষেপন করছেন। এজঘন্নতম এমন ঘটনার ন্যায় বিচারের দাবী জানান ঐ পরিবার।

বাদী হামিদা বেগম বলেন, আমার জমি গুলি লাল চাঁন ও বিয়াই আব্দুস সালামের কাছে বর্গা দিয়েছি। রাতারাতি শত্রুতা করে আমার সৎ ছেলে, নাতী মমিন ও সাইদ মিয়া ৩৬ শতাংশ জমিতে বিষ প্রয়োগ করে ধান ক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে। আমি এলাকার মাতাব্বরদের কাছে বিচার চেয়ে বিচার পাইনি। বিধায় সঠিক বিচারের আসায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

বর্গা চাষি লাল চাঁন ও আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের কোন জমি জমা না থাকায় হামিদার কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে দিনাতী পাত করে আসছি। আমার ধান গুলি বিষ প্রয়োগে নষ্ট করে দিয়েছে। এঘটনার ন্যায় বিচার চাই।

জহুরুল মাষ্টারের নিকট ধানের জমিতে বিষ প্রয়োগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি স্কুলে থাকি। স্কুলের দক্ষিণ পাশে তাদের জমি। বিষ প্রয়োগে ধান নষ্ট হয়েছে দেখেছি। কে বা কারা ক্ষতি করেছে তা আমি জানি না।

এন্তার আলীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায় নি। বিবাদী সালামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে পাওয়া যায় নি।

ইউপি সদস্য ফিরোজ আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, বিষ প্রয়োগে ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। কে বা কারা নষ্ট করেছে তা প্রমান পাওয়া যায়নি। তবে বাদী হামিদা বেগম থানায় অভিযোগ দায়ের করলে, থানায় বিষয়টি নিয়ে মিমাংশার লক্ষে বৈঠক হয়। পারিবারিক অন্যান্য বিষয় নিয়ে, মিমাংশার লক্ষে এলাকায় বৈঠকের কথা বলা হয়েছে। ধান কাটাকাটি হলে বসে সমাধান করা হবে।

সরেজমিনে তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই হামিদুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখি বিষ প্রয়োগে ধান পুড়ে ফেলার ঘটনা সত্য। তবে কে বা কারা করেছে স্বাক্ষী পাওয়া যায় নি।

অফিসার ইনচার্জ রূপ কুমার সরকার জানান, অভিযোগ পেয়েছি এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.