শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে হিমশিম খাচ্ছে জার্মানি

0 ১২৯
পশ্চিম বলকান রুটে অবিবাসীরা

জার্মানিতে শরণার্থী আসার সংখ্যা বাড়ছে৷ কিন্তু ২০১৫-১৬ সালে আসা শরণার্থীদের অনেকে এখনও নিজস্ব থাকার জায়গা খুঁজে পাননি৷

জার্মানির হেসে রাজ্যের ফুলডা জেলা প্রশাসন সম্প্রতি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছে যে, তাদের ওখানে নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার আর কোনও জায়গা নেই৷ ফুলডার প্রশাসক ব্যার্নড ভয়ডে জানান, শুধু যে বাসস্থানের অভাব আছে, তা নয়৷ শিশু ও চিকিৎসা সেবা, স্কুলসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অনেক চাপ রয়েছে৷

ফুলডার মতো আরও অনেক শহরও একই অবস্থায় পৌঁছে যাওয়ার কথা জানিয়েছে৷

জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী সংস্থা বিএএমএফ জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে৷ এর মধ্যে ৪৪ হাজার আবেদন করেছেন সিরিয়ার নাগরিকরা৷ এরপরে আছে আফগানিস্তান (প্রায় ২৮ হাজার) ও তুরস্ক (প্রায় ১৯ হাজার)৷ এছাড়া আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন৷

বিএএমএফ জানিয়েছে, এক লাখ ৩৩ হাজার আবেদন বিবেচনা করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ৪৮ শতাংশ আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ অর্থাৎ আবেদনকারী প্রতি দুইজনের মধ্যে একজনের জার্মানিতে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷

হিল্ডেসহাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বরিস ক্যুনের ধারণা, এ বছর জার্মানিতে প্রায় তিন লাখ মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করতে পারেন৷

একজন শরণার্থী জার্মানিতে পৌঁছার পর তাকে প্রথমে একটি অস্থায়ী জায়গায় রাখা হয়৷ তার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে সেখানেই থাকতে হয়৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব অস্থায়ী কেন্দ্রের বেশিরভাগগুলোতেই এখন নতুন করে আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠানোর সুযোগ নেই৷ কারণ সেগুলোতে থাকার জায়গা নেই৷ এর একটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন বরিস ক্যুন ও জার্মানির ট্যুবিঙ্গেন শহরের শরণার্থী বিষয়ক কর্মকর্তা ইউলিয়ান শ্লিশ্ট৷ তারা যৌথভাবে একটি তদন্ত করে দেখতে পেয়েছেন, ২০১৫-১৬ সালের শরণার্থী সংকটের সময় জার্মানিতে যে শরণার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এসেছিলেন তাদের প্রায় ২৫ শতাংশ এখনও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আছেন৷ অনেকে আশ্রয়ের অনুমতি পেলেও আবাসন সংকটের কারণে নিজস্ব বাসা পাচ্ছেন না৷

ক্যুন আর শ্লিশ্ট বলছেন, ২০১৫-১৬ সালের পর জার্মানির যেসব এলাকার কর্তৃপক্ষ শরণার্থী বিষয়ে গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে সেসব এলাকায় এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে৷

আর যেসব এলাকার কর্তৃপক্ষ শরণার্থীদের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে সেখানে সমস্যা কম হয়েছে৷ যেমন ডুসেলডর্ফ শহর কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে স্বীকৃত আশ্রয়প্রার্থীদের বাসা খুঁজে দিতে সহায়তা করেছে৷ তারা শরণার্থীদের বাসা ভাড়া দিতে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছে৷

এছাড়া বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের কয়েকটি শহর কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে মিলে স্বীকৃত শরণার্থীদের জন্য বাসা খুঁজেছে৷ পরিত্যক্ত সম্পত্তি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য টাকাও দিয়েছে অনেক শহর কর্তৃপক্ষ৷ শরণার্থীদের বাসা ভাড়া দিতে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে প্রথম কয়েক বছরের জন্য চুক্তিও করেছে কিছু শহর কর্তৃপক্ষ৷

Leave A Reply

Your email address will not be published.