‘শিল্পকারখানাসহ প্রতিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে’

২২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শিল্প-কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবন, যেখানে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল আছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’

দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের উদ্‌বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের চত্বরে আজ রোববার এ উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি।

এ সময় শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা নিতে হবে। বিভিন্ন এলাকায় যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, সেখানেও অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থাটা থাকতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমাদের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, যাঁরা স্থাপত্যবিদ বা প্রকৌশলী, যাঁরা ডিজাইন বা সবকিছু করেন, তাঁদের লক্ষ্য রাখতে হবে, নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করলে সেখানে অগ্নিনির্বাপণের আধুনিক ব্যবস্থা যেমন নিশ্চিত করতে হবে, পাশাপাশি আগুন লেগে গেলে সেটা নির্বাপণে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।’

এ সময় জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করাটা ঠিক নয় উল্লেখ করে ২০০৯ সালে বসুন্ধরা শপিংমলের টাওয়ার অংশে লাগা অগ্নিকাণ্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এক সময় এ পান্থপথের পুরো এলাকাটায় বিল ছিল, যেখানে বসুন্ধরা শপিংমল তৈরি হয়েছে। আজ সেখানকার জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করে পুরো এলাকার জলাধার বিলীন করে ফেলায় সেদিনের অগ্নিকাণ্ডে আগুন নেভানোর জন্য হোটেল সোনারগাঁও-এর সুইমিং পুল থেকে দমকল কর্মীদের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়েছে।’

দুর্গত এলাকায় যেন দমকল বাহিনীর গাড়ি পৌঁছতে পারে, সেজন্য রাস্তার প্রশস্ততার পাশাপাশি পানির সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর এখন ২০ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা রয়েছে এবং ক্রমেই এ সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বহুতল ভবন নির্মাণের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সবাইকে নিশ্চিত হয়েই নির্মাণ পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। এজন্য নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার আয়োজন এবং বহুতল ভবনে খোলা বারান্দা রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন ও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে দমকল বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়।

নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার স্টেশন হলো—টাঙ্গাইলের ঘাটাইল ফায়ার স্টেশন, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়া ফায়ার স্টেশন, গাজীপুরের কাপাসিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর (পুনর্নির্মাণ) ও সিরাজদিখান, মাগুরা সদর (পুনর্নির্মাণ), কিশোরগঞ্জের নিকলী স্থল কাম-নদী, ঢাকার কল্যাণপুর, জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ী (পুনর্নির্মাণ), যশোর সদর ও ঝিকরগাছা (পুনর্নির্মাণ), যশোর সেনানিবাস, যশোরের চৌগাছা ও কেশবপুর, বাগেরহাটের মোল্লাহাট, ফরিদপুর সদর (পুনর্নির্মাণ), চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, হোসেনপুর, মিঠামইন ও পাকুন্দিয়া, মেহেরপুরের মুজিবনগর, রাজবাড়ীর কালুখালী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, নোয়াখালীর কবিরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, বান্দরবানের থানচি ও রামু, খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, নেত্রকোনার পূর্বধলা, ময়মনসিংহের গৌরীপুর ও মাদারীপুরের কালকিনি ফায়ার স্টেশন।

Comments are closed.