শ্রীলঙ্কায় ওষুধের ঘাটতি বয়ে আনতে পারে মৃত্যুর মিছিল

১৯৮
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তৈরি হওয়া ওষুধ-ঘাটতি দেশটির অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। ছবি : রয়টার্স

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট ওষুধের ঘাটতি দেশটির অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হাসপাতালগুলো তাদের রোগীদের জন্য জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসাসেবা স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছে, কারণ তাদের কাছে প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কা তাদের চিকিৎসা সামগ্রীর ৮০ শতাংশের বেশি আমদানি করে থাকে। কিন্তু, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো আমদানি করতে না পারায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে তাঁদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।

রাজধানী কলম্বোর উপকণ্ঠে ৯৫০ শয্যা বিশিষ্ট ক্যানসার হাসপাতালে রোগীসহ তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও চিকিৎসকরা বর্তমানে চরম অসহায় বোধ করছেন। কেননা, হাসপাতালগুলো বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা ও জটিল অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে।

রোশন অমরাতুঙ্গা নামের এক চিকিৎসক বলেন, ‘ক্যানসার রোগীদের জন্য এটা খুবই খারাপ।’

রোশন অমরাতুঙ্গা বলেন, ‘মাঝেমধ্যে সকালে আমরা অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা করি। কিন্তু, পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাবে নির্দিষ্ট দিনে তা করতে পারি না।’

রোশন আরও জানান, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে বেশ কয়েকজন রোগীর প্রাণশঙ্কায় পড়বেন।

চিকিৎসা সরবরাহের দায়িত্বে থাকা এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, ডায়ালাইসিস রোগীদের জন্য ইনজেকশন, ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা রোগীদের জন্য ওষুধ এবং ক্যানসারের ওষুধসহ প্রায় ১৮০টি সরবরাহ ফুরিয়ে গেছে।

সামান রথনায়েক নামের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ভারত, জাপানসহ অন্যান্য বহুপক্ষীয় দাতারা ওষুধ সরবরাহ করছেন। তবে, সব সরঞ্জাম আসতে আরও প্রায় চার মাসের মতো সময় লাগতে পারে।

রথনায়েক আরও জানান, শ্রীলঙ্কা এরই মধ্যে দেশে-বিদেশে ব্যক্তিগত দাতাদের সাহায্যের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এবার শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে বিধ্বংসী অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। এ ছাড়া তেলের দাম বৃদ্ধি, জনগণের ট্যাক্স কমানো এবং রাসায়নিক সার আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার জেরে দেশটিতে বিভিন্ন খাতে সংকট তৈরি হয়েছে।

Comments are closed.