সমালোচনার মুখে মিথ্যাচার করছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

২১৮
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ছবি : পিআইডি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিদেশিদের কাছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক চিঠি লেখার কারণে দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে আত্মরক্ষার জন্য প্রচণ্ড মিথ্যাচার করছে বিএনপি।’

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো বিএনপির মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠিপত্র ও বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে বিএনপির ঢাকা অফিসের ঠিকানা সম্বলিত চুক্তিনামা গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন তিনি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করা, দেশের রপ্তানিবাণিজ্য বন্ধ করা, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, দেশকে বিদেশিদের কাছে বিব্রত করার জন্য বিদেশিদের কাছে বিএনপি চিঠি লিখেছে ও লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এ জন্য সুশীল সমাজসহ দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে গতকাল (মঙ্গলবার) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব সংবাদ সম্মেলন করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি যে বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখেছেন, সেটি শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন। তবে সাহায্য বন্ধ করার জন্য যে বলেছেন, সেটি অস্বীকার করেছেন।’

ড. হাছান সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্যবিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান ও বৈদেশিক প্রোগ্রাম বরাদ্দবিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল লেখা চিঠির কপি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে ওই বছরের ২৪ এপ্রিল বিএনপির প্যাডে লেখা মির্জা ফখরুল স্বাক্ষরিত আরও কিছু চিঠির কপিও তুলে ধরেন তিনি। এগুলোর মধ্যে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান, পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া এবং কাউন্টার টেররিজমবিষয়ক সিনেটের সাব-কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে লেখা চিঠির কপি ছিল।

মন্ত্রী চিঠিগুলোর শেষ অনুচ্ছেদ পড়ে শোনান এবং বলেন, ‘সেখানে বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য দেওয়াকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অর্থাৎ প্রকারান্তে সাহায্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।’

তথ্যমন্ত্রী লবিস্টদের সঙ্গে বিএনপির চুক্তিপত্রগুলো দেখিয়ে বলেন, ‘বিএনপি কয়েকটি চুক্তিতে তাঁদের কার্যালয়ের ঠিকানা-২৮ ভিআইপি রোড, নয়াপল্টন, ঢাকা, বাংলাদেশ দিয়েছে। তাঁদের পক্ষে আব্দুস সাত্তার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং একই ধরনের চুক্তি তাঁরা বিদেশের ঠিকানা দিয়ে করেছেন। সেখানে স্বাক্ষর করেছেন জিয়াউল ইসলাম।’

‘মির্জা ফখরুল সাহেব এই ডকুমেন্টগুলো কীভাবে অস্বীকার করবেন’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা যে প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেন, দেশের বিরুদ্ধে তাঁরা যে ষড়যন্ত্র করছেন, এগুলো হচ্ছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। শুধু তাই নয়, তাঁরা যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও ক্রমাগতভাবে মিথ্যাচার করেছেন, গতকাল বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই তা প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। জলজ্যান্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল সাহেব মিথ্যাচার করেছেন, সেই প্রশ্ন আমারও।’

মন্ত্রী বলেন, ‘পুরো জাতি যখন তাঁদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে, তখন তিনি আত্মরক্ষার্থে সংবাদ সম্মেলন করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেটি ঢাকা যাচ্ছে না। যে রাজনৈতিক দল এ ধরনের কাজ করে, তাঁদের আসলে দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে বিএনপির অব্যাহত মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র, লবিস্ট নিয়োগ করে দেশকে বিব্রত করার অপচেষ্টা সত্ত্বেও সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের পিস বিল্ডিং কমিশন অর্থাৎ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই কমিশনের সদস্য। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য ও পররাষ্ট্রবিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে। তাই বিএনপিকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানাবো।’

Comments are closed.