সাপাহারে শুরু হয়নি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ : হতাশায় হাজারো বেকার যুবক

৯২৮

মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদনের দুই বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি করতে পারেনি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সম্ভাব্য ব্যয় পাঠানোর বছরের অধিক সময় পার হয়েছে।

বেজা থেকে বরাদ্ধ না পাওয়ায় এখনো ভূমি অধিগ্রহণ শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। যাতে করে পিছিয়ে পড়েছে প্রকল্পটির কাজ। অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখা হাজারো বেকার যুবক এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা! প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এই উপজেলায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ।

সূত্র মতে জানা যায়, গত ২০১৬ সালের ফেব্রয়ারী মাসে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সারাদেশে একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘোষণার পর নওগাঁ-১ আসনের সাংসদ ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম শাহ চৌধুরী ও তৎকালীন উপজেলা নির্বহী অফিসার ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া সম্মিলিতভাবে সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জোর সুপারিশ পাঠান। যার ফলস্বরূপ গত ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবনায় আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত দুই বছর আগে সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার ফলে হ উপজেলার হাজারো বেকার যুবক কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন কাজের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পেয়ে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে বেকার যুবকদের মাঝে।

একাধিক তরুণ উদ্যোক্তা বলেন, প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের কয়েক হাজার মণ আম নষ্ট হয়। আবার তীব্র গরমে আম পেকে নষ্ট হয়। অর্থনৈতিক অঞ্চল থাকলে এখানে দেশের স্বনামধন্য কোম্পানিগুলো জুস কারখানা গড়ে তুলত। এতে করে উপজেলাসহ পুরো জেলার আম চাষিরা তাদের নষ্ট হওয়া কোটি টাকার আম নায্যমূল্যে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবে।

এছাড়াও অর্থনৈথিক অঞ্চলের পাশাপাশি স্থলবন্দর স্থাপন হলে হাজার তরুণের কর্মসংস্থান হতে পারতো। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সুমন জিহাদী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ব্যয়ের একটি চিঠি নির্বাহী চেয়ারম্যান বেজাকে পাঠানো হয়েছে। বেজা থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দিলে বিষয়টি নিয়ে জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অনুমোদন দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য প্রায় ২৫২ একর জমি ও ৮ একর খাস জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া করা হয়েছিলো। আমরা ইতিমধ্যে জেলা প্রসাশকের নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি অধিগ্রহনের জন্য আবেদনের মাধ্যমে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পন্ন হলে এ উপজেলার সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। যার মধ্যে উপজেলার জবই বিলের প্রাকৃতিক মাছ, আম সংরক্ষণাগার, জুস কোম্পানী সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেলে এই এলাকার যুবক সহ সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে।

অনতিবিলম্বে জমি অধিগ্রহন শুরু করে অর্থনৈতিক অঞ্চল সহ স্থল বন্দরের কাজ শুরু করা হোক এমনটা দাবী জানিয়েছেন এলাকার অভিজ্ঞ মহল।

Comments are closed.