জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করব কী না, সময় বলে দেবে : প্রধানমন্ত্রী

১৭৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আমরা জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করব কী না সেটা সময় বলে দেবে। ভবিষ্যতে কীভাবে করব সেটি ভবিষ্যত বলে দেবে। আমরা পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেব। তবে কেউ পৃথক নির্বাচন করলে আমাদের আপত্তি নেই।

সদ্যসমাপ্ত ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার বিকেলে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের ব্যাংক বীমা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি। টিভি চ্যানেল বৃদ্ধি করেছি, এতে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশে বিএনপি আমলে কয়টা টিভি ছিল আপনারাই চিন্তা করেন। মানুষ এখন কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে, সমালোচনা করার সুযোগ পাচ্ছে; আগে সে সুযোগ ছিল না। বিএনপি রাস্তায় আন্দোলন করছে কিন্তু জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। সমালোচনায় আমরা বাধা দিচ্ছি না। আমরা উন্নয়ন করেছি। জনগণ যদি মনে করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে তাহলে আমাদের ভোট দিবে; আর না হলে কিছু করার নাই। আমি চাই দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ অব্যাহত থাকুক। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হতো।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের চারপাশের মধ্যে এক কোনায় মিয়ানমার। এছাড়া হিসেব করলে আমাদের চারপাশে ভারতের অবস্থান।  আমরা ভারত থেকে কী পেলাম সেটা বিষয় নয়; আপনি কীভাবে দেখছেন সেটি মুখ্য বিষয়। ভারতের সাথে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের যোগাযোগ ভালো। আমরা ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছি।  এখন ভারত থেকে জ্বালানি তেল এনে ডিপোতে রাখা হবে। এতে করে দেশের মানুষের আর্থিক জীবন ধারণ উন্নত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ভারত থেকে পণ্য আমদানি করি। এলএনজি  আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। একেবারে শূন্য হাতে আসিনি সেটা বলতে পারি। বিষয়টি হলো আমাদের কে কীভাবে দেখছে সেটি হলো বিষয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৩১.৫৭ কিলোমিটার (বাংলাদেশ অংশে ১২৬.৫৭ কিলোমিটার এবং ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার) পাইপলাইন ভারত সরকারেরর অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ অংশের ১২৬.৫০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মধ্যে ১২৫ কিলোমিটার পাইপালাইন স্থাপন শেষ হয়েছে। পাইপলাইন নির্মাণের ফলে জ্বালানি তেলের পরিবহণ ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং সহজে, দ্রুততম সময়ে ও প্রতিকূল পরিবেশেও দেশের উত্তরাঞ্চলের রেলের চাহিদা মোতাবেক ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত থেকে বার্ষিক ৬০-৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়। পাইপলাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ভারত হতে ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হবে। পার্বতীপুরে বর্তমানে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ১৫ হাজার মেট্রিক টন। চলমান প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৮শ মেট্রিক টন স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পাবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর মোট চার দিন সে দেশে সরকারি সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে অভিন্ন সীমান্ত নদী কুশিয়ারা থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারসহ সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সফরে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাত করেন।

Comments are closed.