দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বিশ্ব সংস্থা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানালেও সরকার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাষাণের মতো আচরণ করছে। এমনকি তারা জোরালো ভাষায় প্রতিবাদটুকুও করছে না। মিয়ানমার বাহিনীর হেলিকপ্টার বার বার বাংলাদেশের সীমা অতিক্রম করলেও সরকার দায়সাড়া একটি প্রতিবাদ লিপি দিয়ে কর্তব্য শেষ করেছে। কারণ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বর্বরতা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে অনেকাংশেই মিল পাওয়া যায়।’
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির বলেন, ‘হৃদয়বিধারক রোহিঙ্গাদের করুণ পরিণতিতে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয় কাঁদলেও সরকার এ বিষয়ে শুধু নির্বিকারই নয় মরার ওপর খাড়ার ঘা দেয়ার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর চলছে পৈশাচিক নির্মূল অভিযান। আর তা থেকে বাঁচার জন্য তারা যখন বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে চায় তখন সরকারের বাহিনী তাদেরকে প্রতিহত করছে। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারাও দেশে গুম, হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা আর নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের নৈতিক মনোবল বা শক্তি না থাকায় জোরালো কুটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারছে না। যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক সরকার আজ দেশে ক্ষমতায় থাকত তাহলে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন বন্ধের কার্যকর উদ্যোগ নেয়া সম্ভব ছিল। যদি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকত তাহলে জাতীয় ইস্যুতে বিশ্ববাসীকে একত্রিত করতে জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারত।’
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘বর্বরতার মুখে প্রাণ বাঁচাতে হাজারো রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ছুটে আসছেন। তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন। নো ম্যান্স ল্যান্ডে মানবেতর জীবন যাপন করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার। খাদ্য ও পানির অভাবে সেখানে হাহাকার চলছে। সীমান্ত পেরিয়ে কিছু কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়লেও তারা সাহায্য পাচ্ছে না। তারা ঈদুল আজহার দিনে প্রাণ ভয়ে নাফ নদীর তীরে রক্তমাখা শরীর নিয়ে লুটোপুটি খাচ্ছে। আর বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে আশ্রয়ের আশায় কিন্তু তাদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসাধীন থাকলেও ঈদের আগে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দলমত নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশীদের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।’
শেখ হাসিনার অধীনেই সহায়ক সরকার হবে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যের সমালোচনায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষের যে সংলাপ চলছে সেখানে প্রায় সকলেই সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সহায়ক সরকারের পক্ষে কথা বলেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনী ঘর অগোছালো রাখতে পারলেই তাদের দলীয় উদ্দেশ্য সাধিত হয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আওয়ামী লীগ কখনই করবেনা বলেই তাদের সাধারণ সম্পাদক দলীয় প্রধানের অধীনে নির্বাচনের কথা বলছেন। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ব্রেকিংনিউজ