কুড়িগ্রামের রৌমারীর বিদ্যালয় মেশিনেও কাজ হচ্ছেনা হাজিরা ফাঁকি ক্ষতিগ্রস্ত সরকার

মাজহারুল ইসলাম রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সময়মতো প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ক্রয় করা হয় বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন। কিন্তু করোনার কারনে প্রতিষ্ঠান গুলো টানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকায় অধিকাংশ বায়োমেট্রিক ডিভাইস অচল। বর্তমানে প্রায় সবগুলি ডিভাইস অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

অনলাইনের মাধ্যমে রিচার্জ করার কথা থাকলেও কেউই জানেন না রিচার্জ করলে ডিভাইজ গুলি সচল থাকে। ফলে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যায়ে সারাদেশের ন্যায় রৌমারীতেও ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয় করে বিদ্যালয়ে, বসানো হলেও সে, গুলি বর্তমানে কোন কাজে আসছে না। এতে সরকার বিপুল পরিমানের অর্থ ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলায় মোট ১শত ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে একটি স্কুল শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১ টি শিশু কল্যান স্কুল বাদ দিয়ে ১শত ১৪ টি বিদ্যালয়েই ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এ গুলো ক্রয় করা হয়েছিল মোট ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রতিটি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রতি অর্থ বছরে উন্নয়ন সংস্কারের জন্য সরকার স্লিপের নামে কিছু অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। এই তহবিল থেকে বিদ্যালয় গুলোতে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন গুলো ক্রয় করতে বলা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও ৪ গুন বেশী মুল্যে হাজিরা মেশিন ক্রয় করা হয়েছে বলে সুত্ররা জানায়। ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা মুল্যের মেশিন ক্রয় করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকায়।

এ মেশিন গুলি ৪গুন বেশি দামে ক্রয় বিষয় নিয়ে শিক্ষক ও উপজেলা কর্মকর্তার মধ্যে একটি অর্ন্তদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল। এতো টাকায় হাজিরা মেশিন ক্রয় করবে না বিষয় নিয়ে শিক্ষক কর্মকর্তাদের মধ্যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। হঠাৎ সবকিছু ধুলয় মিশিয়ে ৩০ হাজার টাকায় শিক্ষকদের রাজি করিয়ে ডিজিটাল মেশিন ক্রয় করে বিদ্যালয়ে স্থাপন করে নিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম।

রৌমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম, রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিজু, গয়টা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলফা আরেফিনসহ আরোও অনেকেই জানান, স্লিপের ৩০ হাজার টাকা অফিসিয়াল ভাবে কেটে নিয়ে এ ডিজিটাল মেশিন ক্রয় করে বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন গুলি অচল অবস্থায় রয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০ টাকা রির্চাজ করলেই মেশিন গুলো চালু থাকে এমন কথাটি আমরা জানিনা।

রৌমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ১শত ১৫টি বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১শত ১৪ টি বিদ্যালয়েই ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। গত দুই বছর আগে করোনার কারনে স্কুল গুলি বন্ধ থাকায় মেশিন ব্যবহার না করার কারনে প্রায় স্কুলের মেশিন গুলি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অনলাইনে রির্চাজের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জানান।