বাঁশ খান, সুস্থ থাকুন

ব্রেকিংনিউজ ডেস্ক: ছোট্ট একটি শব্দ ‘বাঁশ’। প্রচলিত ধারায় বাঁশ মানে একে অপরের ক্ষতি চাওয়ার কারণ। কাউকে নিয়ে উপহাস করার জন্যও বাঁশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অথচ আমাদের দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে বাঁশ খুবই সুস্বাদু একটি খাবার।

আদিবাসীদের উপাদেয় খাবার হিসেবে পরিচিত বাঁশ। এই বাঁশের কচি অংশকে ‘বাঁশ কোরল’ বলা হয়। এটিকে কোথাও কোথাও পোয়া, মিয়া, কচি বাঁশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই বাঁশ কোরল পাহাড়ি এলাকায় পাওয়া যায়। আদিবাসীরা যুগ যুগ ধরে এটি খেয়ে থাকেন। তবে বাঁশ আমাদের অনেক উপকারী উদ্ভিদ হলেও বাঁশের ঔষধি গুণ সম্পর্কে আমাদের তেমন কোনো ধারণা নেই।

দৈহিক সুস্থতায় বাঁশ খুবই উপকারী। বিভিন্ন রোগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি দিতে বাঁশের কার্যকারিতা অপরিসীম। তাইতো চীনারা বাঁশের কোরলকে বলেন ‘স্বাস্থ্যকর খাবারের রাজা’। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক বাঁশের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতাগুলো-

বাঁশের কন্দ ও পাতা কাশি কমায়। দাঁতের মাড়ি শক্ত রাখতে সহায়তা করে। চুল পড়া বন্ধ হয়। গাভীর দুধ বাড়াতে ব্যবহার হয় বাঁশ।

বাঁশের পুষ্টিগুণ : তাজা বাঁশের কোরলে ৮৮দশমিক ৯৩ শতাংশ পানি, ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিন, ০ দশমিক ২৫ থেকে ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ চবি, ০ দশমিক ৭৮ থেকে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ চিনি, ০ দশমিক ৬০-১ দশমিক ৩৪ শতাংশ সেলুলোজ এবং ১ দশমিক ১ শতাংশ খনিজ পদার্থ আছে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনও পাওয়া যায়।

বাঁশের উপকারিতা: বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে দেহের নানা রোগ প্রতিরোধ করে বাঁশ। সাধারণত খুশখুশে কাশি কমাতে হলে দু-চামচ বাঁশপাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। দাঁতের মাড়ি মজবুত রাখতে বাঁশের গোড়া পুড়িয়ে ছাই দিয়ে মাজলে দাঁতের মাড়ি মজবুত হয়। একই সঙ্গে দাঁতে কোন সংক্রমণ থাকলে তা সহজেই দূর হবে। বাঁশের কোরল দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি উচ্চ রক্তচাপ কমায় ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে বাঁশের জুড়ি নেই। তাছাড়া হাঁপানী, ডায়াবেটিস, তীব্র জ্বর, মৃগি রোগ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অবদান রাখে বাঁশ।

বহু পূর্ব থেকে মঙ্গোলীয় জনগোষ্টির প্রিয় খাবার এটি। বর্তমানে এই বাঁশ কোরল দিয়ে তৈরি করা খাবার বেশ জনপ্রিয়। অনেকে এটিকে সবজি হিসেবে তরকারিতে ব্যবহার করেন। আবার অনেকে আচার বানিয়ে খেতেও পছন্দ করে- প্রচলিত লোকজ জ্ঞান।

Comments (০)
Add Comment