জানা গেছে, উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের চকপোতা দ্বাড়কিপাড়া গ্রামের মৃত মাজেম প্রামানিকে ছেলে পঞ্চান্নোর্ধ বসয়ী বৃদ্ধ জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে একই এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মাতব্বর নামে পরিচিত হায়দার আলী তার ৮ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে যৌন নিপীড়নের আনে। এঘটনায় গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এলাকার কতিপয় মাতব্বরদের নিয়ে একটি শালিশী বৈঠক করে। বৈঠকে জালাল উদ্দিনকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে হায়দার আলীর নির্দেশে কতিপয় যুবকেরা তাকে বেদম মারপিট করে। পরে তার মাথার চুল এবরো থেবরো করে কেটে দিয়ে এবং গলায় জুতার মালা পরিয়ে বৈঠকস্থল সহ এলাকায় ঘুরানো বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। খবর পেয়ে থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল মজিদ ঘটনাস্থল থেকে অপমানের চুল কাটা অবস্থায় ওই বৃদ্ধ জালাল এবং মাতব্বর হায়দার আলীকে আটক করে থানায় আনে। অন্যদিকে ওই বৃদ্ধা বিরুদ্ধে ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি শিশু কন্যা এমনকি শিশু ছেলেকেও যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে বৃদ্ধ জালাল যৌন নিপীড়নের অভিযোগটি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, তার বসতবাড়ীর কাছে মসজিদ রয়েছে। মসজিদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে হায়দারের চাপে তার ৩শতক জমি বিক্রি না করায় তার(বৃদ্ধা) বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে এলাকায় হায়দারের বাহিনী দিয়ে আমাকে বৈঠকের নামে আমাকে মারপিটসহ চুল কেটে ও জুতার পরিয়ে মানহানিকর পরিস্থিতির শিকার করেছে।
অপরদিকে আওয়ালীগ নেতা মাতব্বর হায়দার আলী বলেন, কোন পিতা কি চায় তার সন্তানের মানহানি হোক। তবে ওই বৃদ্ধ জালাল কয়েক মাস যাবত আমার চতুর্থ শ্রেনীতে পড়–য়া শিশুকন্য এবং একই পাড়ার আমিনুল ইসলামে শিশু কন্যা এমনকি শিশু ছেলেসহ বেশ কয়েকজনকে মাঝেমধ্যে যৌন নিপীড়ন করে আসছিল। সম্প্রতি আমার কন্যাকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে শালিশী বৈঠক করি এবং নিজে দিকবিদিক ভুলে গিয়ে এমন শাস্তি দিয়েছি বলে তিনি স্বীকার করেন। তাছাড়া নিজের কন্যার যৌন নিপীড়নের বিচার করে গিয়ে আইনের জালে নিজে ফেঁসে যাব ভাবতে পারিনি বলে তিনি আক্ষেপ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এদিকে গ্রাম্য শালিশী বৈঠকে যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত বিচার ও অতঃপর মারপিট, মাথার চুলকাটা ও জুতার মালা পরিয়ে মানহানি ও অপমান তাছাড়া আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অপরাধে ওই বৃদ্ধ জালাল উদ্দিন বাদি হয়ে গত ৯ আগস্ট মাতবব্বর হায়দার আলী সহ ৫জনকে আসামী করে প্রচলিত আইনের দন্ডবিধি ৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৫০০/৫০৬ ধারায় মামলা নং ৭ দায়ের করেন বলে থানার কর্তব্য উপ-পুলিশ পরিদর্শক ডেভিট হিমাদ্রী বলেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মিজানুর বলেন, অপরাধী যত অপরাধই করুক না কেন, তার জন্য আইন ও আদালত রয়েছে। গ্রাম্য শালিশী বৈঠকের নামে মানহানি ও আপত্তিকর বিচার ব্যাবস্থা হওয়ায় মামলা গ্রহন পূর্বক প্রচলিত আইনেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।