ফ্রান্সের বিমানবাহী জাহাজে করোনার হানা, ৬৬৮ নাবিকের শনাক্ত

0 ২৮২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্সের বিমানবাহী রণতরী চার্লস দ্য গল’র ৬৬৮ জন নাবিকের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম দ্য এজ।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১ হাজার ৭৬৭ জন নাবিককে পরীক্ষা করে ৬৬৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে আরও ৩১ জন করোনা পরীক্ষার অপেক্ষায় হাসপাতালে রয়েছে। আরো বেশি সংখ্যক নাবিককে পরীক্ষা করা হবে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি বাল্টিক সাগরে উত্তর ইউরোপের নৌ-বাহিনীর সঙ্গে অনুশীলনে অংশ নিয়েছিল ফ্রান্সের নৌ-বাহিনী। সেখান থেকে ফেরার পর দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। তারপর অন্তত ৪০ জন নাবিকের শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অসুস্থ নাবিকদের ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বর্তমানে বিমানবাহী জাহাজ চার্লস দ্য গল’র নাবিকদের নৌঁ ঘাঁটিতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এমনকি সেই জাহাজে থাকা বিমানগুলোর পাইলটদেরও কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য নৌ-বাহিনীর প্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৩, মারা গেছে ১৭ হাজার ১৬৭ জন।

উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে গত ডিসেম্বরে প্রথম করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। তারপর তিন মাস পার হয়েছে। কিন্তু এখনও নিয়ন্ত্রণের লক্ষণ দৃশ্যমান নয়। ইতিমধ্যে করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সারাবিশ্ব। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ৭ হাজার ৯৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬০৩ জন।

এছাড়া বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৪ হাজার ৫১৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার ১৭১ জন।

সবমিলিয়ে, বর্তমানে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৯ জন আক্রান্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ লাখ ৮৭ হাজার ১১৭ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। আর ৫১ হাজার ১৪২ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিউতে রয়েছে।

ভাইরাসটি চীন থেকে ছড়ালেও বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯, মারা গেছে ২৮ হাজার ৫২৯ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে।

এছাড়া ইতালিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৫, মারা গেছে ২১ হাজার ৬৪৫ জন। স্পেনে আক্রান্ত ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৫৯, মারা গেছে ১৮ হাজার ৮১২ জন। জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৩, মারা গেছে ৩ হাজার ৮০৪ জন। চীনে আক্রান্ত ৮২ হাজার ৩৪১, মারা গেছে ৩ হাজার ৩৪২ জন। ফ্রান্সে আক্রান্ত ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৩, মারা গেছে ১৭ হাজার ১৬৭ জন। ইরানে আক্রান্ত ৭৬ হাজার ৩৮৯, মারা গেছে ৪ হাজার ৭৭৭ জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ৯৮ হাজার ৪৭৬, মারা গেছে ১২ হাজার ৮৬৮ জন। বেলজিয়ামে আক্রান্ত ৩৩ হাজার ৫৭৩, মারা গেছে ৪ হাজার ৪৪০ জন। নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ২৮ হাজার ১৫৩, মারা গেছে ৩ হাজার ১৩৪ জন। সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ২৬ হাজার ৩৩৬, মারা গেছে ১ হাজার ২৩৯ জন। তুরস্কে আক্রান্ত ৬৯ হাজার ৩৯২, মারা গেছে ১ হাজার ৫১৮ জন। ব্রাজিলে আক্রান্ত ২৮ হাজার ৭৪৬, মারা গেছে ১ হাজার ৭৫৭ জন। কানাডাতে আক্রান্ত ২৮ হাজার ৩৭৯, মারা গেছে ১ হাজার ১০ জন। সুইডেনে আক্রান্ত ১১ হাজার ৯২৭, মারা গেছে ১ হাজার ২০৩ জন।

এছাড়া ভারতে মোট আক্রান্ত ১২ হাজার ৩৭০, মারা গেছে ৪২২ জন। পাকিস্তানে আক্রান্ত ৬ হাজার ৩৮৩, মারা গেছে ১১১ জন। বাংলাদেশে আক্রান্ত ১ হাজার ২৩১, মারা গেছে ৫০ জন।

এ রোগের কোনো উপসর্গ যেমন জ্বর, গলা ব্যথা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি, এর কারণে স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতিও কাজ না করতে পারে তাই এগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জনবহুল স্থানে চলাফেরার সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বাড়িঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে এবং খাবার আগে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.