জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি: ওবায়দুল কাদের
জামায়াতে ইসলাম নিষিদ্ধের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই তাদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেহেতু জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, সেহেতু ভিন্ন কোনো উদ্যোগ নেয়া যুক্তিসংগত নয় বলে আমরা মনে করি। আমরা আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ ধরনের প্রক্রিয়া শুরু করার ব্যাপারে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হয়নি।’
জামায়াতকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াত ছাড়া বিএনপির টিকে থাকাই দুষ্কর। নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে বিএনপি যেখানে গিয়ে পৌঁছেছে, তাদের বড় সমাবেশ, বড় মিছিল করতে হলে জামায়াতকে দরকার। জামায়াতের আবার একটি সমর্থক-কর্মীর ব্যাংক আছে। কাজেই সমাবেশ বড় করতে হলে, মিছিলে লোক বেশি আনতে হলে জামায়াত ছাড়া তাদের (বিএনপি) চলবে না।’
‘আমরা বারবার একই কথা বলেছি, সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর বিশ্বস্ত ঠিকানা বিএনপি। বিএনপি-জামায়াত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাদের একটিকে ছাড়া আরেকটির চলবে না,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
বিএনপির সঙ্গে পাল্টা কোনো কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। পর দিন ১১ জানুয়ারি আমাদের কর্মসূচি ছিল। মফস্বলের উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করেছি। এটি সবসময় হয়ে আসছে। এখানে পাল্টাপাল্টির কোনো বিষয় না। তবে বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। সেটা হচ্ছে সতর্ক পাহারায় থাকা। যাতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে না পারে এবং অশান্তি, বিশৃঙ্খলা সহিংসতার কোনো উপাদান যুক্ত হতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকছি।’
কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) কর্মসূচি দিতে পারে, তারা একবার বলে দশ দফা আবার বলে এক দফা। তারপর দেখলাম ২৩ দল, আবার ৫৪ দল। এখন শুনলাম আবার ৫২ দল একসঙ্গে ১৬ জানুয়ারি কর্মসূচি পালন করবে। এখন তাদের এই জগাখিচুড়ি ঐক্যের শেষ কোথায়। অতি বাম, অতি ডান মিলেমিশে একাকার।’
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘তাদের তো কোনো নেতা নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি আমাদের সভাপতি। তিনি আমাদের পরবর্তী নির্বাচনের নেতা। তাদের কে? তারা কখনও বলে বেগম খালেদা জিয়া, কখনো বলে তারেক রহমান তাদের নেতা। কিন্তু তাদের নির্বাচন করার যোগ্যতা নেই। তারা অভিযুক্ত আসামি। কাকে তারা নেতা বানাবেন? গতবার কামাল হোসেন ছিল। পরে তাদের মানসম্মানও বিঘ্নিত হয়ে গেছে। সবাই জানেন, শেষ পর্যন্ত তিনিও (কামাল) হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এবার কী হবে, সময় বলে দেবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা রাজপথে আছি। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আমাদের বিক্ষোভ করার কিছু নেই। তবে শান্তি সমাবেশ করব। শান্তির শোভাযাত্রা করব। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সতর্ক অবস্থানে থাকব। আমাদের বিক্ষোভের কোনো কারণ নেই।’