দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ–চালিত নৌকা

0 ২,৫৮৪
চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে গতকাল দেশে তৈরি সৌরবিদ্যুৎ-চালিত প্রথম নৌকা চালানো হয়। সদর উপজেলার আলোকদিয়া থেকে দুপুরে তোলা ছবি l শাহ্ আলম

চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে গতকাল রোববার ভাসানো হলো দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ-চালিত ইঞ্জিন নৌকা। বিদ্যুৎ বিভাগের টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) ও ইউএনডিপির শীর্ষ কর্মকর্তা, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সোলার-ই-টেকনোলজির প্রকৌশলী ও গণমাধ্যমকর্মীরা পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া নৌকাটিতে চড়েন।
বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা নৌকাটি নদীতে চালানো হয়। কর্মকর্তারা নৌকাভ্রমণ শেষে এই উদ্ভাবনকে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
প্রকৌশলী আহমেদুল কবীর জানান, ইউএনডিপির অর্থায়ন ও স্রেডার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলট প্রকল্প) সৌরবিদ্যুৎ-চালিত মোট পাঁচটি নৌকা (সোলার বোটিং) তৈরি করা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী দুটি নৌকা সনাতন পদ্ধতি (ডিজেল ইঞ্জিনচালিত) ও সৌরবিদ্যুতের মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। বাকি তিনটি সম্পূর্ণরূপে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে চালানোর উপযোগী করে তৈরি করা হবে। যে নৌকাটি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হলো, সেটিতে দুটি সুবিধাই রয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় সোলার-ই-টেকনোলজির নিজস্ব কারখানায় এগুলো তৈির করা হচ্ছে।
স্রেডার পরিচালক (নবায়নযোগ্য জ্বালানি) শেখ রিয়াজ আহমেদ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও সৌরবিদ্যুৎ-চালিত নৌকার সুফল বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত বলেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০-এর ৭ নম্বর লক্ষ্যটি বাস্তবায়নের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) গঠন করা হয়েছে।
শেখ রিয়াজ আহমেদ সৌরবিদ্যুৎ-চালিত নৌকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘মোট ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি নৌকা তৈরি করা হচ্ছে। যার মধ্যে ২টিকে সনাতন ও আধুনিকতার মিশেল রাখার পেছনে কারণ হচ্ছে, যদি কখনো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সৌরবিদ্যুৎ কাজ না করে, তখন ডিজেল ইঞ্জিন চালিয়ে নৌকাটিকে গন্তব্যে পৌঁছানোর সুযোগ থাকবে। নৌকা চলার সময় ইঞ্জিনের শব্দ কানে লাগছে। আমরা সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে শব্দ কমিয়ে আনতে বলেছি।’
ইউএনডিপির প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট আরিফ মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশের অন্যতম বাংলাদেশ। এই দেশ নদীমাতৃক হওয়ায় ডিজেল ইঞ্জিনচালিত নৌকার কারণে পরিবেশ ও নদীর পানিদূষণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যে কারণে নদীগুলো থেকে অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুৎ-চালিত নৌকায় পরিবেশ ও নদীর পানিদূষণের কোনো আশঙ্কা নেই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.