নির্বাচন কমিশনকে ‘নির্বাসন কমিশন’ বললেন আলাল

0 ৪১৬

নির্বাচন কমিশনের নাম পরিবর্তন করে ‘নির্বাসন কমিশন’ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদ‌লের সা‌বেক সভাপ‌তি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

 

রবিবার (১৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে দলের যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল রচিত ‘কুপি বাতির গণতন্ত্র’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গ্রন্থটি প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থা।

 

আলাল বলেন, ‘কুপি বাতি কেন? কুপি বা‌তি হচ্ছে এই কারণে যে, কুপি বাতি সেই আমলের কথা স্মরণ করায়। সেই সময়ে যারা বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত ছিল, তাদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই মানুষের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যারা আছেন তারা চুপচাপ আছেন। এ কারণে ডিজিটাল সিস্টেমের কিছু কিছু জিনিস আমাদের ভালো লাগে না। আমরা এনালগে ফিরে যেতে চাই। যে এনালগে আমরা জীবনের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাই।’

 

তিনি বলেন, ‘১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষরা ঝাঁপিয়ে পড়ে যুক্তফ্রন্টকে বিজয়ী করেছিল। সে নির্বাচনে কোনও নির্বাচন কমিশন ছিল না। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানের মত লোকদের আমলেও নির্বাচন হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকাকে বিজয়ী করেছে। সেদিনও তো নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ধ্বংস দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচন কমিশনের নাম পরিবর্তন করে ‘নির্বাসন কমিশন’ করা হয়েছে। তাহলে ‘কুপি বাতি’ বলবো না তো কী বলবো বলেন? এজন্য কি মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন?’

 

তিনি বলেন, ‘এই স্বাধীন দেশে, স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী টিকা নিয়ে অভিনয় করেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কতটুকু নির্লজ্জ আমরা। এই রাষ্ট্রটা সবার, সবার অধিকার আছে। এই জিনিসগুলোই আমি ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি এই বইতে।’

 

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘কুপি বাতি জ্বালিয়ে আমরা অনেকেই পড়াশোনা করেছি। তাতে কি আমরা শিক্ষিত হয়নি? কিন্তু এলইডি বাতিতে যারা পড়াশোনা করে তারা আজ সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান দিতে জানে না। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ও মাতৃত্বকে সম্মান দিতে জানে না। নিজের মেয়েকে রাজাকারের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে ওরা মুক্তিযুদ্ধের বড়াই করে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া এই ডিজিটাল সিস্টেম আমরা চাই না। এটাই হচ্ছে এই বইয়ের নামকরণ এর মূল বিষয়।’

 

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মিছিল থেকে আমাকে গ্রেফতার করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৬ বার আমাকে জেলগেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪০ দিন আমাকে রিমান্ডে নিয়েছে দফায় দফায়। এদেশে রাজনীতি করা কি অপরাধ? রাজনীতি করা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে সে অপরাধ আমি বারবার করব। আমার দেশমাতাকে নিয়ে আমি বারবার লিখবোই। এ বইটির কিছু অংশ আমি জেলখানায় বসে লিখেছি। আপনার পড়‌বেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।’

 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, দলের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান ও জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশক জহির তৃপ্তি প্রমুখ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.