বগুড়ার শেরপুরে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক আটক

0 ১৩৩

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৯) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ররোয়া আর্জিনা হামিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটে।

রবিবার (১৮জুন) দুপুরে এ নিয়ে স্থানীয় জনতা এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে ওই প্রধান শিক্ষক তারিকুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান ও থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) রবিউল ইসলামসহ সঙ্গীয় ফোর্স এবং শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে যায়। পরে ওই শিক্ষককে অপসারণসহ আইনী ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়ায় স্থানীয়দের উত্তেজিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে এহেন পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ ।

স্থানীয়রা জানান, শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ররোয়া আর্জিনা হামিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার বিকালে প্রাইভেট পড়ানোর সময় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে চিৎকার দিয়ে ওই ছাত্রী ছুটে বাড়িতে যায়। পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে রবিবার(১৮ জুন) স্কুল খোলার পর থেকে স্থানীয় এলাকাবাসীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি পূর্বক এবং তাকে অপসারনের দাবীতে বিদ্যালয় কক্ষে অবরুদ্ধ করে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাবা বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানতে পারি। আমি তৎক্ষাণাৎ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ভাইয়ের কাছে জানাই। তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও নিরব থাকে। পরে শুক্রবার ওই শিক্ষক ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি তাতে রাজি হইনি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

ররোয়া গ্রামের আবু সাইদ, রফিকুল, সেলিমসহ একাধিকরা বলেন, এই শিক্ষক এর আগেও চারবার এধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রতিবারই ম্যানেজিং কমিটির লোকজনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছে। তার কাছে আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ নয় বলে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম জানান, আমি একই গ্রামের মানুষ হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ওই ছাত্রীকে উত্যাক্ত করেছে প্রধান শিক্ষক এমনটাই শুনেছি, তবে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ দেইনি, তাছাড়া যদি ওই শিক্ষক অপরাধ করে থাকে তাহলে উপযুক্ত বিচার কামনা করছি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে।

শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) রবিউল ইসলাম জানান, শিক্ষককে অবরুদ্ধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থালে গিয়ে স্থানীয় জনগণকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় আনা হয়েছে।

শেরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান জানান, আমরা ঘটনাস্থালে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবু কুমার সাহা জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠায় তাকে থানায় আনা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.