মু.জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল : বঙ্গবন্ধুসেতুর পূর্ব পাড় থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ক এলাকায় মঙ্গলবার(৬ সেপ্টেম্বর) গভীর রাত থেকে বুধবার(৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা দেয়। এ সময় থেমে থেমে ঘণ্টায় ২-৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় যানবাহনগুলো। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতায় দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। যানজটে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) এরশাদুল হক জানান, পাটুরিয়ায় তিনটি ফেরিঘাট বন্ধ থাকায় অনেক যানবাহন সড়ক পথে ঢাকা যাচ্ছে। এছাড়া কুরবানির মৌসুমের কারণে উত্তরবঙ্গ থেকে গরুভর্তি ট্রাকও ঢাকার দিকে যাচ্ছে। তাই এ সড়কে ঢাকামুখী অংশে গাড়ির তীব্র চাপ রয়েছে। ফলে বঙ্গবন্ধুসেতু এলাকা থেকে ঢাকামুখী যাত্রীরা তীব্র যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা পুলিশ, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।
টাঙ্গাইলের গোড়াই হাইওয়ে থানার এলেঙ্গা ফাঁড়ির ইনচার্র্জ জাহাঙ্গীর আলম বিকাল ৩ টায় জানান, দীর্ঘসময় যানজট থাকার পর এখন যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
প্রকাশ্যে সম্পাদকের কাগজপত্র ছিনতাই!
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পাপিয়ার প্রধান সম্পাদক মো. সেলিম তরফদারের কাছ থেকে মূল্যবান কাগজপত্র ছিনতাই করা হয়েছে। মঙ্গলবার(৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে ভূঞাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড’র চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার সারোয়ার জাহান শামীম-এর নিয়ন্ত্রণাধীন টাঙ্গাইলস্থ ‘দি ল’ চেম্বার’ এর একটি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত মামলার পূর্ব প্রতিশ্রুত পাওনা টাকা আনতে মঙ্গলবার(৬ সেপ্টম্বর) বিকাল ৪টার দিকে সাপ্তাহিক পাপিয়ার প্রধান সম্পাদক মো. সেলিম তরফদার ভূঞাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড’র চেয়ারম্যান আ. লতিফ মিন্টুর কক্ষে যান। ওই কক্ষে জনৈক গামছা রফিক(৪২), বাবু(২৮) সহ ৬-৭ ব্যক্তি আগে থেকে বসে ছিলেন। ওই মামলার বিষয়ে কথা হওয়ার এক পর্যায়ে গামছা রফিকের ইঙ্গিতে বাবু, রফিক ও তার সঙ্গীরা হঠাৎ মো. সেলিম তরফদারের ২টি কোর্ট ফাইল নিয়ে দৌঁড়ে অন্যত্র চলে যায়। এ সময় ওই কক্ষে অবস্থান করা সকলে হতভম্ব হয়ে পড়ে।
মো. সেলিম তরফদার জানান, দুইটি কোর্ট ফাইলের একটিতে তাঁর সদ্য পাওয়া পাসপোর্ট, সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড, বালু ব্যবসার কয়েকটি চুক্তিপত্র এবং অন্যটিতে ‘দি ল’ চেম্বার’ এর সঙ্গে ভূঞাপুরের পূণর্বাসন-৩ গ্রামের আ. রশিদ ও তোতা’র মামলা ও আর্থিক লেনেদেনের চুক্তিপত্র, সালিশ নামা, টাকা বুঝে নেয়ার অঙ্গিকারনামা ইত্যাদি ছিল।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে মো. সেলিম তরফদার বুধবার(৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) একেএম কাউছার হোসেন চৌধুরী জানান, একটি আর্থিক লেনদেনের বিষয় নিয়ে হট্টগোলে সাংবাদিক সাহেবের ফাইল কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব বিবেচনায় সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মধুপুরে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জেলখানা নামক স্থান থেকে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) অজ্ঞাত ব্যক্তির(৪০) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই এলাকায় শ্রমিকরা লেবু বাগানে কাজ করতে গিয়ে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকাসহ দুই অপহরণকারী আটক
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলে মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকা সহ অপহরণচক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। নারায়নগঞ্জের এক প্রবাসীকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ করে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে অপহরণকারীরা। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে দাবিকৃত টাকার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা দেয়ার সময় টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর সদস্যরা হাতেনাতে দুইজনকে ধরে ফেলে এবং ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল র্যাব কার্যালয়ের সামনে প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাবের কোম্পানী কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আজিবপুর এলাকার সুরুজ মিয়া লিখিত অভিযোগ করেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকায় তার শ্যালক মাহবুবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করেন। গত ২৯ আগষ্ট সকালে অজ্ঞাতনামা একটি মোবাইল ফোন থেকে জানানো হয় মাহবুবুর রহমানকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ করা হয়েছে। তাকে জীবিত অবস্থায় পেতে চাইলে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এক পর্যায়ে ৩০ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মাহবুবের পরিবার। অপহরণকারীরা মুক্তিপনের টাকা নিয়ে টাঙ্গাইলের একটি অজ্ঞাতস্থানে যেতে বলে।
র্যাবের একটি দল ফোনের সুত্র ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণকারীদের সাথে কথা বলে। টেলিফোনের মাধ্যমে বাদিকে অপহরনকারীরা ঢাকা-মির্জাপুর বাইপাস সড়ক ধরে বামনহাটি আদালতপাড়া যেতে বলে। সেখানে আগে থেকেই অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য উপস্থিত ছিল। আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া একটি কোড নম্বর বলে বাদি অপহরণকারীদের চিহ্নিত করেন। এরপর ৩০ লাখ টাকা লেনদেনের সময় র্যাবের সদস্যরা তাদেরকে আটক করে। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হয় র্যাব। র্যাব জানতে পারে, মির্জাপুরের হালপাড়া গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে মনির হোসেন ও তার সহযোগীরা মাহবুবকে অপহরণ করেছে। মনিরের বাবা ও তার সহযোগী জিয়াউর রহমানকে আটক করার খবর পেয়ে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতেই অপহৃত মাহবুবকে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনের একটি রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।
কোম্পানী কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকীর বর্ণনামতে, দক্ষিণ আফ্রিকায় তাদের সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশীদের অপহরণ করে দেশে এভাবে মোটা অংকের টাকা নিয়ে থাকে বলে আটককৃতরা জানায়। এ পর্যন্ত চক্রটি অন্তত ১০টি অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলে ডিজিটাল শো-রুমের গোডাউনে আগুন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল শহরের ভিক্টোরিয়া রোডের ট্রান্সকম ডিজিটাল শো-রুমের গোডাউনে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটেছে।
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মফিদুল ইসলাম জানান, তারা দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাটি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ৪০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি আরো জানান, গোডাউনটি প্রায় ৫০০ বর্গফুট। সেখানে প্রচুর ফ্রিজ ও এসি ছিল, যা অত্যন্ত দাহ্য। সময়মত খবর পাওয়ায় তারা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন এবং ব্যাপক ও ধ্বংসাতœক অগ্নিকান্ডের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
শো-রুমের ম্যানেজার আসাদুল ইসলাম জানান, গোডাউনে সামসং, হিটাচি, ওয়ালপুল, ট্রান্সটেক, ফিলিপস্ সহ নামী-দামী ব্র্যান্ডের ফ্রিজ, এসি, মাইক্রোওভেন সহ সকল ইলেকট্রনিক্স পণ্য ছিল। তিনি জানান, গোডাউনে ৬০-৭০টি ফ্রিজ ছিল। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা বলে জানান ম্যানেজার।