বুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, ১৪ অক্টোবর বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা
বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম : পাঁচ দফা দাবি না মানলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা হতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের সম্মানের কথা চিন্তা করে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে আগামী দুই দিন আন্দোলন স্থগিত রাখছেন তারা।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে এই সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছেছেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
আবরার হত্যাকাণ্ডের পর আবরার হত্যার দ্রুত বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এসব দাবি মেনে নিতে সম্মত হন। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য সময় চান তিনি। পরে স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা যায়- এমন পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, এসব দাবি পূরণ হলেই কেবল তারা মনে করবেন যে ক্যাম্পাসে ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উপযোগী পরিবেশ আছে।
এই দাবিতে আজ শনিবার টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলনে নামেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। তবে ভর্তি পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের ‘সম্মান জানিয়ে’ ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তারা। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা পরীক্ষার্থীদের সম্মান জানিয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেবো। আগামী দুই দিন রোববার (১৩ অক্টোবর) ও সোমবার (১৪ অক্টোবর) আমাদের আন্দোলন স্থগিত থাকবে। এরপর আমরা আবার পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন শুরু করব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপ থেকে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন বুয়েট উপাচার্য। এসময় আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ আসামিকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি-
১. হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে সাময়িক বহিষ্কার এবং পরে অভিযোগপত্রে যাদের নাম আসবে, তাদেরও স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে— এই মর্মে বুয়েট প্রশাসনকে নোটিশ জারি করতে হবে।
২. আবরার হত্যা মামলার সব খরচ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে এবং তার পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বুয়েট প্রশাসন বাধ্য থাকবে— এটি নোটিশে লেখা থাকতে হবে।ব্রেকিংনিউজ
৩. বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে হলগুলো থেকে অছাত্র ও অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত করতে হবে। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যালয় সিলগালা করতে হবে।
৪. বুয়েটে আগে ঘটে যাওয়া সব শিক্ষার্থী নির্যাতন, হয়রানি ও ভবিষ্যতে এ ধরনের যেকোনো ঘটনা প্রকাশের জন্য বিআইআইএস অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম যুক্ত করতে হবে এবং এর পূর্ণ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করে শাস্তি দিতে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। বিষয়টি একটি নোটিশের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
৫. প্রত্যেক হলের সব তলায় সব উইংয়ের দুইপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা যুক্ত করতে হবে এবং এই সিসিটিভি ফুটেজ সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে— এই মর্মে একটি নোটিশ জারি করতে হবে।