সাপাহারে অসময়ে পাওয়া যাচ্ছে বারোমাসি কাটিমন আম

0 ১৯৯

মনিরুল ইসলাম,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: আমের বানিজ্যিক রাজধানী খ্যাত উত্তরের জনপদ নওগাঁর সাপাহার উপজেলা। ইতিমধ্যে সারাদেশ সহ বিদেশের মাটিতেও সাড়া ফেলেছে সাপাহারের আম। প্রতিবছর এই উপজেলায় আম বানিজ্য হয় ২হাজার কোটি টাকার। এবারেও আমের মৌসুম প্রায় শেষ। তারপরেও যেন শেষ হয়নি আম।

অসময়ে নওগাঁর সাপাহারে বাজার মাতাচ্ছে কাটিমন জাতের আম। একদিকে দামে সন্তষ্ট চাষীরা অপরদিকে অসময়ে সুমিষ্ট আম পেয়ে খুশি সাধারণ ক্রেতারা। বারোমাসি আমের মধ্যে কাটিমন ও বারি-১১ আম অন্যতম। কারণ এই জাতের আমগুলোর ফলন খুব বেশি। এই আমের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একসঙ্গে গাছের একদিকে গুটি ও মুকুল এবং অন্যদিকে আম ধরে।

একেকটি থোকায় একাধিক আম ধরে। ক্ষেত্র বিশেষে এ জাতের আমের দেড় বছরের গাছে থোকায় ৪/৫ টি করেও আম দেখা যায়।এর একেকটির ওজন হয় ২৫০ থেকে ৫৫০ গ্রাম। আমের চামড়া খুব পাতলা হলেও সেটিও অনেক মিষ্টি।ভেতর আঁশ নেই, খেতেও খুব সুস্বাদু এবং মিষ্টি। আম পরিপক্ব হয়ে হলুদ রঙ হলে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। আমগুলো পরিপক্ব হতে সাধরণত দুই থেকে আড়াই মাস সময় লাগে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে বারোমাসি এই জাতের আম এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে এই উপজেলায়।

২/৩ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে সাপাহারে গড়ে উঠেছে কাটিমন জাতের আম বাগান। আমের মূল মৌসুম পার হয়ে গেলেও গাছে আম যেন ছেয়ে গেছে। পরিপূর্ণ মৌসুমের মতো সেজেছে আম বাগান। অসময়ে পাওয়া যায় বলে এই আমের ব্যাপক চাহিদা ও দাম রয়েছে বাজারে। বারোমাসি এই জাতের আম বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ পাইকারী বিক্রয় হচ্ছে ১০-১২ হাজার টাকা। আমচাষী তরুণ সাহা বলেন, তিনি গত ২বছর আগে অন্যদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বছরের প্রথম দিকে কাটিমন জাতের একটি বাগান করেন। স্থানীয় চারা বাজার থেকে চারা সংগ্রহ করেন ।

প্রাথমিক অবস্থায় কিছুটা সংশয়ে থাকলেও বর্তমানে গাছের পরিধি বিস্তার সহ আম বিক্রয় করে সেই সংশয় কেটে গেছে বলে জানান। তিনি আরো জানান, “আমি গতকাল বাজারে প্রতিমণ কাটিমন আম বিক্রয় করেছি। আমের গুণগত মান অনুযায়ী প্রতিমণ আম বিক্রয় করেছি ১০/১২ হাজার টাকা।

পাইকারী আম ক্রেতা মুনিুল হক বলেন, “কাটিমন জাতের আমের চাহিদা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক বেশি। তাই আমরা এই জাতের আম কিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী করছি। এই আম অসময়ে পাওয়া যায় বলে ক্রেতাসাধারণের মাঝে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যার ফলে দাম বেশি হলেও আম কিনতে আগ্রহী ক্রেতা মহল।” উপজেলা কৃষি অফিসার শাপলা খাতুন বলেন “এই জাতের গাছগুলোতে প্রায় প্রতি মাসেই মুকুলের দেখা মেলে। বাজারে মৌসুমের সময় যে সমস্ত জাতের আম পাওয়া যায়, সেগুলো স্বাদের দিক থেকে অনন্য। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই আমগুলো পাওয়া যায়। একটি মুকুল ভেঙে ফেললে সেটি আবার হয়।

রোগবালাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমচাষীদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। রোগবালাই নেই বললেই চলে। তবে পানি সেচের ব্যপারে সর্তক থাকতে হবে কারণ পানি ঠিকমত না পেলে গাছে মুকুল আসবে না।” এই জাতের আম সারা বছর উৎপাদন হবার ফলে এর চাহিদা বেশি অপর দিকে আমের বাজার মূল্য বেশ সন্তোষজনক। প্রতিমণ কার্টিমন জাতের আম বিক্রয় হচ্ছে সাড়ে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত যা ২৫০-৩৫০ টাকা কেজি। যার ফলে কাটিমন আম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। চাষিরা এই জাতের আম চাষ করলে ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্থানীয়রা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.