হরমোনের ভারসাম্যহীনতা যেভাবে টের পাবেন

0 ৫৮৩

স্বাথ্য অনলাইন ডেস্ক : হরমোন হচ্ছে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা গ্রন্থি হতে নিঃসরিত হয়ে বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়া বিক্রিয়া, বৃদ্ধি, রক্তচাপ নিয়ন্ত্র, মাতৃদুগ্ধ তৈরী, যৌন পরিপক্কতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে৷
অন্তঃক্ষরা হরমোনের অণুগুলো রক্ত সংবহন তন্ত্রে সরাসরি নিঃসরিত হয়। অপরদিকে বহিঃক্ষরা হরমোনগুলো (এক্সোহরমোন) সরাসরি নালিতে, বা নালির মাধ্যমে নিঃসরিত হয়। এ ধরনের হরমোন সংবহন তন্ত্রের মাধ্যমেও নিঃসরিত হতে পারে, এছাড়াও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় এক কোষ থেকে অন্য কোষেও এক্সোহরমোন পরিবাহিত হতে পারে।
আপনি হতাশায় ভুগবেন, না কি সুখে ভাসবেন তা অনেকটা নির্ভর করে শরীরে হরমোনের ক্রিয়াকলাপের ওপর। হরমোন এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা আপনার শরীরের বার্তাবাহকের কাজ করে। জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই আমাদের শরীরে হরমোনের ক্ষরণে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন আমাদের পরিপক্ক করে, প্রজননক্ষম করে। আমাদের পরিপাক, মানসিকতা ও শারীরিক উন্নতি হরমোনের ক্ষরণের ওপর নির্ভর করে।
হরমোনঘটিত রোগ
● থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যাওয়া।
● থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়া(হাইপারথাইরয়ডিজম)।
●  ডায়াবেটিস।
●  ডায়াবেটিস রোগীর অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা।
আমরা তখনই শরীর ও মনে সুস্থ থাকি যখন সব ধরনের হরমোন সঠিক পরিমাপে ক্ষরণ হয়। কিন্তু হরমোন ক্ষরণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলেই আপনার কর্মক্ষমতা নষ্ট হবে,আপনি মানসিকভাবেও অক্ষম হয়ে পড়বেন।শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বুঝার কয়েকটি সহজ উপায় আছে।
উপায়গুলো হলো
পরিপাক সমস্যা: নিয়মিত খাবার খাওয়ার পরও যদি পরিপাক সমস্যা চলতেই থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে, আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে আপনাকে খাবারের তালিকায় বৈচিত্র্য আনতে হবে। তবে বৈচিত্র্য আনতে গিয়ে কোন অস্বাস্থ্যকর খাদ্য যেন আপনার তালিকায় ঢুকে না যায়।
যৌনতায় অনীহা: যৌনতায় অনীহা সৃষ্টি হলে অনেকটাই নিশ্চিত করে বলা যায় যে, আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণ ঘুম না হলে আপনার শরীরে সেক্স হরমোন ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে পড়ে। তাই, আপনার ঘুমের নিয়ম নিয়ে ভাবুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত করুন।
আড়ষ্টতা: যদি কোন কাজ শেষ করার আগেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, কাজের গতি ধীর হয়ে পড়ে তাহলে বুঝে নিবেন, আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এই ধরনের সমস্যা হলে, খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন আর গম ও শস্যদানা জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন।
হতাশা: শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে নিজেকে হতাশ ও বিচ্ছিন্ন মনে হতে থাকে। যদি অন্য কোন রোগে না ভুগেন তাহলে মনে করতে হবে, আপনার খাদ্যভ্যাসে হেরফের হয়েছে। নিজের শরীরটাকে বোঝার চেষ্টা করুন। শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করুন।
অস্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস: এমন হতে পারে যে, আপনার অস্বাভাবিকভাবে ক্ষুধা লাগছে। কখনও কখনও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেতে ইচ্ছে করছে। এই লক্ষণগুলোও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ। এই ধরনের সমস্যা হলে, চিনিজাতীয় পদার্থ কম গ্রহণ করা, মদ্যপান কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে পারেন।
ঘাম: শরীর রাতের বেলায় ঘামলে ও উত্তাপ বেড়ে গেলে আশঙ্কার কারণ আছে যে, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। নিজের দৈনন্দিন অভ্যাসের তালিকা তৈরি করুন। কি ধরনের খাবার ও পরিস্থিতিতে আপনার মনে কেমন প্রভাব সৃষ্টি হয় তার একটি তালিকা করুন। যেগুলোতে সমস্যা সৃষ্টি হয় সেগুলো পরিহার করে চলুন।
কালানুক্রমিক মানসিক চাপ: পালা করে যদি মানসিক চাপে ভুগতে হয় তাহলেও শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। মানসিক চাপ মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের আশপাশের পরিবেশটা বদলান, খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন।
ওজন বেড়ে যাওয়া: স্বাস্থ্যকর খাবার ও শারীরিক পরিশ্রম করার পরও ওজন বেড়ে যাওয়াও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ। কারখানায় প্রস্তুত খাদ্যদ্রব্য, চিনিজাতীয় খাদ্য ও আটা পরিহার করুন। নিজের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায়ও পরিবর্তন আনুন। ব্রেকিংনিউজ/

Leave A Reply

Your email address will not be published.