ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর প্রশ্নে কোণঠাসা ম্যাক্রোঁ

0 ৯৫
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এএফপির ফাইল ছবি

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সোমবার ইউক্রেনে পশ্চিমা সৈন্য পাঠানোর সম্ভাবনার উল্লেখ করলেও জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ তার বিরোধিতা করেছে৷ এদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন আরও জমি হারাচ্ছে৷

সোমবার ইউক্রেন সংক্রান্ত সম্মেলন আয়োজনের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, প্রয়োজনে ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশের সৈন্য পাঠানো যেতে পারে৷

তিনি রাশিয়ার হামলা মোকাবিলায় ইউক্রেনের জন্য কোনো ধরনের সহায়তার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে চাননি৷ কিন্তু তাঁর এমন ‘বেলাগাম’ মন্তব্যের পর ন্যাটোর একাধিক দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে৷

মঙ্গলবার প্রথমে জার্মানি ও পোল্যান্ড স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, যে সেই দুই দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠাচ্ছে না৷

জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বলেন, প্যারিস সম্মেলনের অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ইউরোপ বা ন্যাটোর স্থলবাহিনী বা সৈন্য না পাঠানোর বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে৷ মধ্য ইউরোপের একাধিক দেশও সেই অবস্থান নিচ্ছে৷ ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গও বলেন, সামরিক জোটের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই৷ রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়াতে এখনো পর্যন্ত এমন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে৷ একমাত্র ৩১টি সদস্য দেশ সম্মিলিতভাবে সেই সিদ্ধান্ত নিলে তবেই ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানো সম্ভব৷ সংবাদ সংস্থা এপিকে স্টলটেনবার্গ আরও বলেন, ন্যাটো সদস্যরা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনকে অভূতপূর্ব সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে৷ হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সংগ্রামের জন্য ইউক্রেনে মার্কিন সৈন্য না পাঠানোর বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে আসছেন৷

রাশিয়া ম্যাক্রোঁর মন্তব্য সম্পর্কে পশ্চিমা জগতকে সতর্ক করে দিয়েছে৷ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেকসভ বলেন, ন্যাটো ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য সৈন্য পাঠালে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত অপরিহার্য৷ তাঁর মতে, এমনটা ঘটলে ন্যাটো ও রাশিয়ার সংঘাতের ‘সম্ভাবনা’ দেখা দেবে না, সেই সংঘাত অবশ্যম্ভাবী হবে৷

ঘরে-বাইরে এমন তীব্র প্রতিক্রিয়ার মাঝে ফ্রান্স ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের ‘সঠিক প্রেক্ষাপট’ ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছে৷

সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ঁ লোকোমু বলেন, প্যারিস সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনো ঐকমত্য অর্জিত হয়নি৷ তাছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর কথা হয়নি৷ ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফান সেজুর্ন বলেছেন, মাইন অপসারণ, অস্ত্র উৎপাদন বা সাইবার অপারেশনের মতো কাজের জন্য পশ্চিমা সৈন্য পাঠানো যেতে পারে৷

চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়ার প্রবল হামলার মুখে আভদিভকা শহর থেকে ইউক্রেনের সৈন্যরা সরে আসার পর মঙ্গলবার আরও দুটি গ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হয়েছে৷ পশ্চিমা সহায়তায় টান পড়ার কারণে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ কমে আসছে৷ ফলে বাধ্য হয়ে বাস্তবসম্মত প্রতিরক্ষার পথ বেছে নিচ্ছেন সেনা কর্মকর্তারা৷ মার্কিন সংসদে ইউক্রেনের জন্য ৬,০০০ কোটি ডলার অংকের সামরিক সহায়তার প্রস্তাবের জট ছাড়াতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন মঙ্গলবার দুই দলের উচ্চপদস্থ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন৷

Leave A Reply

Your email address will not be published.