জান্তা সরকারের ‘অনুগত’ থাকলেই বেসামরিকরা পাবে অস্ত্র

0 ২০০
মিয়ানমারের সশস্ত্র দিবস উপলক্ষে নাইপিতাওর একটি অনুষ্ঠানে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। ছবিটি ২০২১ সালের ২৭ মার্চে তোলা। ছবি : রয়টার্স

মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের দুই বছর পেরিয়েছে। এখনও দেশটির ক্ষমতায় রয়েছে জান্তা সরকার। গণতন্ত্রপন্থীদের আন্দোলনের মুখে তাদের অবস্থা তেমন সুখকর নয়। তবে, এবার বেসামরিকদের কাছে টানতে বিকল্প একটি পথের দিকে যাচ্ছে জান্তা সরকার। অনুগত থাকলেই বেসামরিকদের দেওয়া হবে অস্ত্রের লাইসেন্স। এমনকি অস্ত্র নিয়ে যেখানে সেখানেও ঘোরাও যাবে। সরকারি নথির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যম। খবর রয়টার্সের।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বেসামরিকদের অস্ত্র বহনের অনুমতি জান্তাপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে শক্তিশালী করবে ও সহিংসতা বাড়াবে। এমনকি জান্তা বাহিনী ও বিরোধী সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ বাড়বে, যা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।

ফাঁস হওয়া সরকারি নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৮ বা তার বেশি বয়স্করা নিরাপত্তাজনিত কারণে অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন ও তা বহন করতে পারবে। তবে, এ জন্য সরকারের প্রতি অনুগত থাকতেই হবে। এ ছাড়া, সরকারিভাবে গঠিত সশস্ত্র বাহিনী ও সামরিক বাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্তরা পিস্তল, রাইফেল ও সাবমেশিনগানের লাইসেন্স পেতে পারবেন।

এতে আরও দেখা যায়, প্রয়োজনে জান্তা সরকার অস্ত্র আমদানি ও লাইসেন্সধারীদের কাছে বিক্রি করতে পারবে।

মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফাঁস হওয়া নথিটি ১৫ পৃষ্ঠার। তবে এটি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। এমনকি কবে থেকে এটি আইন হিসেবে কার্যকর হবে তা জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে টেলিফোনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রকে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।

রয়টার্স বলছে, দীর্ঘ পাঁচ বছর গণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করার পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত অং সান সু চির দলকে সরকার থেকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংঘাত নজরদারি গ্রুপ এসলেডের তথ্য মতে, ২০২২ সালে মিয়ানমারে ১৯ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে। এর মূলে রয়েছে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়ন। জান্তা সরকারের এই কাজের জন্য অনেকে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নে মিয়ানমারের ১২ লাখ নাগরিক স্থানচ্যুত হয়েছে। সামরিক বাহিনী যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.