নতুন আইনে বয়স কমছে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের

0 ২০৭

বয়স গণনায় ঐতিহ্যগতভাবে ‘কোরিয়ান এইজ’ প্রথা মানা হতো দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময় থেকে শিশুর বয়স গণনা করা হয়। যখন একটি শিশু জন্মগ্রহণ করে তখন তাকে এক বছর বয়সী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর প্রতি বছরের পহেলা জানুয়ারিতে তাদের বয়সের সঙ্গে আরও এক বছর যোগ হয়। এর মানে দাঁড়ায়, ৩১ ডিসেম্বরেও জন্ম নেওয়া শিশুটি একদিন বাদেই দুই বছর বয়সী বলে বিবেচিত হবে।

তবে, ঐতিহ্যগত এসব নিয়ম থেকে সরে আসছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করছে দেশটির সরকার। এতে করে দেশটির প্রত্যেক নাগরিকের বয়স কমে যাবে। বয়স গণনায় আন্তর্জাতিক রীতি মানবে এশিয়ার দেশটি। আজ বুধবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

জন্ম তারিখের ওপর ভিত্তি করে বয়স গণনার পরিবর্তন আজ থেকেই কার্যকর হচ্ছে।

গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার আগ থেকেই বয়স গণনার ঐতিহ্যগত এসব নিয়মের বিরুদ্ধে তিনি। এসব নিয়ম পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তিনি। গত বছর ইউন সুক ইওল বলেছিলেন, ‘বয়স গণনায় ঐতিহ্যগত পদ্ধতি অপ্রয়োজনীয়। সামাজিক ও আর্থিকভাবে ব্যয় বৃদ্ধি করে এসব প্রথা।’

ঐতিহ্যগত বয়স গণনার পদ্ধতির পরিবর্তন ও নতুন আইন কার্যকরে দেশটিতে বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হবে। এর মধ্যে রয়েছে বিমার টাকা প্রদান ও সরকারি সাহায্য কর্মসূচিতে যোগ্যতা অর্জনের বিষয়।

বিবিসি জানিয়েছে, গত ডিসেম্বরে প্রথাগত গণনা পদ্ধতি বাতিল করার পক্ষে ভোট দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা। এই উদ্যোগ সত্ত্বেও বছরের হিসাবে বয়স গণনায় ব্যবহৃত ক্যালেন্ডার প্রথা কিছু দিনের জন্য চালু থাকবে। এর মানে, দিনের হিসেবে নয়, বছরের হিসেবেই দক্ষিণ কোরিয়ার একজন নাগরিকের বয়স ১৯ পূর্ণ হলেই তিনি অ্যালকোহল কিনতে পারবেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন নাগরিকই নতুন আইনের পক্ষে মত দিয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে স্থানীয় ফার্ম হ্যাংকক রিসার্চের এক গবেষণায় এমনটি বলা হয়েছে।

শুধু দক্ষিণ কোরিয়া নয়, আগে পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশই বয়স গণনায় ঐতিহ্যগত ক্যালেন্ডার প্রথা ব্যবহার করতো। তবে, প্রায় সবাই আগের প্রথা থেকে সরে এসেছে। ১৯৫০ সাল থেকে প্রথাগত পদ্ধতি বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে আসছে জাপান। আর উত্তর কোরিয়া ঐতিহ্যগত প্রথা মেনে চলেছিল ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.